• ক্লাস শেষ হলেও ছাত্রীকে আটকে রাখত, ফাঁকা ঘরে লাগাতার যৌন হেনস্থা শিক্ষকের! স্কুলে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ফাঁস দশম শ্রেণির ছাত্রীর
    আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্লাস শেষ হলেই সহপাঠীদের বেরিয়ে যেতে বলত শিক্ষক। শুধুমাত্র আটকে রাখত একজন ছাত্রীকে। এরপর ফাঁকা ক্লাসরুমে চলত যৌন নির্যাতন। লাগাতার স্কুলের মধ্যে যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে অবশেষে শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ জানাল ওই ছাত্রী। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার নলগোন্দা জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই জেলার নাকরেকাল এলাকার জেলা পরিষদ হাই স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্রী ওই স্কুলের ইংরেজির শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছে। টানা তিন মাস ওই শিক্ষক যৌন হেনস্থা করত বলে অভিযোগ জানিয়েছে সে। শিক্ষকের যৌন হেনস্থার জেরে মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছে ওই ছাত্রী। 

    লাগাতার স্কুলে যৌন হেনস্থার পর বাবাকে বিষয়টি প্রথমে জানায় ওই ছাত্রী। শিক্ষক সুযোগ পেলেই কীভাবে যৌন হেনস্থা করত, তাও জানায় পরিবার। এরপর ওই শিক্ষকের কাছে ছাত্রীর অভিযোগ জানায় পরিবার। বিষয়টি নিয়ে অশান্তির পরেই থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় ছাত্রীর পরিবার। 

    ছাত্রীর পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানোর পরেই ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে সাসপেন্ড করেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পকসো ধারাতেও মামলা রুজু করেছে পুলিশ।‌ এই ঘটনার পরেই আরও একাধিক ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হেনস্থা ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছে। অভিভাবকরাও ঘটনাটি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। 

    প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসেই স্কুলের মধ্যে যৌন হেনস্থার শিকার আরও এক ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের পরিক্ষিতগড়ে। সাত বছর বয়সি এক খুদে পড়ুয়াকে হোটেল যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ভয়ের চোটে পরিবারকে শিক্ষকের কুপ্রস্তাবের বিষয়টি জানায় ওই পড়ুয়া। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে খুদে ছাত্রীর পরিবার। 

    অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় এবং নাবালিকা ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়া ও হুমকির অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষক অনুরাগকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। গ্রেপ্তারির পরেই কড়া পদক্ষেপ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। দুই মাসের জন্য অভিযুক্ত শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যেও। 

    পুলিশ আধিকারিক শিব প্রতাপ সিং জানিয়েছেন, থানায় এসে নাবালিকা ছাত্রী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। গত ২৩ আগস্ট ক্লাস চলাকালীন অনুরাগ ওই ছাত্রীকে কাছে ডাকে। এরপর হোটেলে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। সোজাসুজি জানায়, 'আমার সঙ্গে ওয়ো হোটেলে যাবি?' সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তাব প্রত্যাখান করে সে। ছাত্রী রাজি না হওয়ায়, ক্লাসের মধ্যেই তাকে হুমকি দেয় শিক্ষক। 

    শিক্ষকের আচরণে ভয় পেয়ে প্রথমে প্রিন্সিপালকে জানিয়েছিল নাবালিকা ছাত্রী। এরপর বাড়ি ফিরে পরিবারকে জানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত চলছে জোরকদমে। 

    প্রসঙ্গত, অতীতে স্কুলের মধ্যেই শিক্ষকের হেনস্থার শিকার হয়েছেন আরও বহু ছাত্রী। হিমাচল প্রদেশের সিরমুরের একটি সরকারি স্কুলে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা প্রিন্সিপালকে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছিল। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বিষয়টি জানান। 

    স্কুলের কমপক্ষে ২৪ জন ছাত্রী, যাদের সকলের বয়স ১৫ বছরের মধ্যে, প্রিন্সিপালকে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেয়। চিঠিতে তারা জানিয়েছে, ওই শিক্ষক পড়া বোঝানোর অজুহাতে অশালীন আচরণ করতেন। নানা অজুহাতে গায়ে হাত দিতেন। ফাঁকা ক্লাসরুমে যৌন হেনস্থাও করতেন। বাইরে ফাঁস করলে আরও অত্যাচারের হুমকি দিতেন। 

    ওই ছাত্রীদের পরিবারকে মিটিংয়ে ডাকেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানেই জানা যায়, শিক্ষকের যৌন হেনস্থার বিষয়টি অধিকাংশ পরিবার জানে না। থানায় জানাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৫ নম্বর ধারা এবং পকসো-তে মামলা রুজু করা হয়েছে। 

    এছাড়াও বিহারের মধুবনী জেলায় জয়নগর এলাকায় আরও ঘটনা ঘটে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, কোচিং সেন্টারের মধ্যে এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করছেন এক শিক্ষক। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত শিক্ষক রাকেশ যাদবের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে। জয়নগর এলাকার বেলওয়া চক গলির গণিত কোচিং সেন্টারে ঘটনাটি ঘটেছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। 

    এই ঘটনার তদন্তে নেমে রাকেশ ছাড়াও বাড়িওয়ালা কুলদীপ সিং, সোনু চৌধুরী এবং যে যুবক ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ওই কোচিং সেন্টারের মধ্যে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির পরেও ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ রয়েছে। 

    ছাত্রীর বয়ান অনুযায়ী, শিক্ষকের শ্লীলতাহানির ভিডিওটি তিনিই শুট করেছিলেন। তাও আবার বাড়িওয়ালা কুলদীপ সিংয়ের জোর করার কারণে। শিক্ষকের কীর্তির ভিডিও তোলার জন্য আগে থেকেই হুমকি দিয়েছিল কুলদীপ সিং। এমনকী ২০ লক্ষ টাকা চেয়ে হুমকি দিয়েছিল সে। ছাত্রী জানিয়েছেন, সেই হুমকির জেরেই মোবাইল ফোনে ভিডিওটি তুলেছিলেন তিনি। এমনকী ওই কোচিং সেন্টারে এলেই কুলদীপ সিং অশালীন আচরণ করত। কখনও কখনও শরীরে অশ্লীলভাবে ছুঁয়ে চলে যেত। 
  • Link to this news (আজকাল)