সারা দেহে ৪০ হাজার মৌমাছি বসে আছে, অথচ হুল ফোটাচ্ছে না! মধুকরদের 'বশ' করে বিশ্বকে চমকে দিলেন রাজেন্দ্র...
আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাধারণত মানুষ মৌমাছি থেকে শতহস্ত দূরে থাকতেই পছন্দ করে। তার কারণও যথেষ্ট সঙ্গত। এদের হুলের জ্বালা যেমন তীব্র, তেমনই কামড়ানোর পর মুহূর্তেই ফুলে ওঠে ক্ষত স্থান। হঠাৎ করে মৌমাছির ঝাঁকের সামনে পড়লে আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পালানোর পথ খোঁজেন প্রায় সকলেই। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তি এই ভয়কেই যেন জয় করেছেন।
খবর অনুযায়ী, বুলন্দশহরের বাসিন্দা রাজেন্দ্রর সঙ্গে মৌমাছিদের সম্পর্ক এককথায় অবিশ্বাস্য। হাজার হাজার পতঙ্গের ঝাঁক দেখলে যেখানে সাধারণ মানুষের গায়ে কাঁটা দেয়, সেখানে রাজেন্দ্র তাদের সাদরে আমন্ত্রণ জানান। সম্প্রতি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, হাজার হাজার মৌমাছি তাঁর সর্বাঙ্গ ছেয়ে ফেলেছে, অথচ তিনি শান্ত ও নির্বিকার। আশ্চর্যের বিষয় হল, একটি মৌমাছিও তাঁকে হুল ফোটায়নি।
এই অদ্ভুত দৃশ্যটি বুলন্দশহর জেলার সিয়ানা তহসিলের। বর্ষার মরশুমে মৌমাছিদের খাবার খুঁজে পেতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এই কঠিন সময়েই তাদের ত্রাতা হয়ে উঠেছেন রাজেন্দ্র। মৌমাছিদের বাঁচিয়ে রাখতে তিনি প্রতিদিন তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন। তাদের প্রতি এই নিষ্ঠার কারণেই স্থানীয়দের কাছে তিনি 'মৌমাছি-প্রেমী' নামে পরিচিতি পেয়েছেন।
তাঁর শরীরে কতগুলি মৌমাছি বসে থাকে, এই প্রশ্নের উত্তরে রাজেন্দ্র বলেন, 'আমার শরীরে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার মৌমাছি রয়েছে।' স্বভাবগতভাবে মৌমাছিরা আক্রমণাত্মক না হলেও, বিপদ আঁচ করলেই তারা হুল ফোটায়। হুলের যন্ত্রণা এবং ফোলাভাবের কথা ভেবেই মানুষ তাদের থেকে দূরে থাকে।
প্রসঙ্গত, কেবলমাত্র স্ত্রী মৌমাছিরই হুল থাকে। মৌমাছির হুল ফোটানো অনেক সময় তাদের নিজেদের জন্যও মারাত্মক। মৌমাছি যখন হুল ফোটায়, তখন তার হুলটি চামড়ার মধ্যে গেঁথে যায়। সেটি ছাড়িয়ে বের করে আনার সময় হুলের সঙ্গে মৌমাছির তলপেটের কিছু অংশও ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে, যার ফলে মৌমাছিটির মৃত্যু হয়। তবে সব মৌমাছিই একবার হুল ফুটিয়ে মারা যায় না। কিছু প্রজাতির মৌমাছি আবার বিপদ বুঝলে একাধিকবার হুল ফোটাতেও সক্ষম।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৌমাছির কামড়ানোর স্থানে তীব্র, তীক্ষ্ণ জ্বালার মতো যন্ত্রণা অনুভূত হয়। এর পাশাপাশি আরও কিছু উপসর্গ দেখা যেতে পারে, যেমন- কামড়ানোর চারপাশে লালচে ভাব, আক্রান্ত স্থান ফুলে যাওয়া এবং চুলকানি বা অস্বস্তি। বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই এই উপসর্গগুলি হালকা হয় এবং কয়েক ঘণ্টা বা দিনের মধ্যেই সেরে যায়।তবে কিছু ক্ষেত্রে, মৌমাছির হুল থেকে অ্যানাফিল্যাক্সিস নামক গুরুতর অ্যালার্জিও হতে পারে। এই ধরনের অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ত্বকে লাল চাকা চাকা দাগ, জিভ বা গলা ফুলে যাওয়া, মাথা ঘোরা, পেটে খিঁচুনি, বমি ভাব বা ডায়রিয়া।