বিহারে মোদির কর্পোরেট বন্ধুকে হাজার একর জমি মাত্র ১ টাকায়
বর্তমান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হবে। তাই দরকার জমির। কিন্তু সেই প্রকল্পের জন্য কৃষকদের থেকে জমি নিয়ে দেওয়া হচ্ছে না ক্ষতিপূরণ। বিহারে কোটি কোটি টাকা দামের জমি কার্যত বিনা পয়সায় তুলে দেওয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধু ব্যবসায়ীকে। বছরে মাত্র এক টাকায়! ৩৩ বছরের জন্য লিজে দেওয়া হচ্ছে ওই হাজার একর জমি। সোমবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরব হল কংগ্রেস। আক্রমণের সুর চড়িয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার দাবি, বিহারের ভাগলপুরে স্রেফ ওই ১,০৫০ একর জমিই নয়। তার সঙ্গে জমিতে থাকা প্রায় ১০ হাজার আম, লিচু এবং সেগুন গাছও নিয়ে নেবেন মোদিজির ওই কর্পোরেট দোস্ত। ওই জমিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠবে। সেখানে তৈরি বিদ্যুৎ বিহারের বাসিন্দাদের ইউনিট প্রতি ৬ টাকা ৭৫ পয়সা দামে বিক্রি করা হবে। এ তো ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ডাবল লুঠ! এভাবে কটাক্ষের কষাঘাতে মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলল কংগ্রেস।
সামনেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিউ (এসআইআর) নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব বিরোধীরা। নাগরিকদের ভোটাধিকার রক্ষার লড়াইয়ে পথে নেমেছে তারা। এবার ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিকে মোদির বিশেষ সুবিধা প্রদানের ইস্যুকেও হাতিয়ার করছে তারা। এদিন কংগ্রেসের মিডিয়া বিভাগের প্রধান পবন খেরার আক্রমণের নিশানায় ছিলেন মোদি। কংগ্রেস নেতা বলেন, ভাগলপুরের জমি মোদির যে কর্পোরেট বন্ধুকে দেওয়া হচ্ছে, তাঁর হাতেই এখন দেশের বেশিরভাগ বিমানবন্দর, বন্দর, খনি তুলে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বেশ কিছুদিন ধরেই এই বিষয়গুলি নিয়েই সরব।
পবন খেরার প্রশ্ন, দেশে কি আর কোনও বিনিয়োগকারী নেই? কেন স্রেফ প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুকেই এই যাবতীয় সুবিধা? লিজের নামে ভাগলপুরে যে পরিমাণ জমি দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বিহারের গান্ধী ময়দানের মতো ১৬ টি মাঠ হয়ে যাবে। গড়ে উঠতে পারে ২২৫ টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ৭৭০ টি ফুটবল মাঠের সমান ওই জমি। কৃষকের থেকে ওই জমি নিয়ে কেন তা মাত্র এক টাকায় দেওয়া হবে? ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওই প্লান্ট তৈরি করতে ২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে। পবন খেরার প্রশ্ন, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে যেখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ চার টাকা, মহারাষ্ট্রে তিন টাকায় বিক্রি করছেন প্রধানমন্ত্রীর এই একই ব্যবসায়ী বন্ধু, সেখানে বিহারে দাম কেন দ্বিগুন? তিনি বলেছেন, এ তো দিনের আলোয় ডাকাতি! তাই কংগ্রেস প্রতিবাদে সরব হবে তো বটেই, দল বিহারে ক্ষমতায় এলে এই প্রকল্প বাতিল করা হবে বলেও জানান এই কংগ্রেস নেতা।