ওয়াকফ আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
বর্তমান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ মিলল না ঠিকই। তবে সংশোধিত ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত মামলার রায়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কাই খেল মোদি সরকার। ওয়াকফ আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গত ২২ মে ওই মামলায় রায়দান স্থগিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এদিন সেই মামলার রায়দান হল। বিরোধীদের আবেদন অগ্রাহ্য করে সম্পূর্ণ আইনের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার দাবি খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তাই বিষয়টিকে নিজেদের জয় হিসেবেই দেখছে বিজেপি এবং সরকার। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছেন, রায় আমাদের পক্ষেই গিয়েছে। প্রমাণ হয়েছে সরকার যে আইন এনেছে, তা সঠিক। তবে এদিন দেশের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ তাঁদের রায়ে সরকারের আনা আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। যা নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য, সরকারের ষড়যন্ত্র ধরা পড়ে গিয়েছে।
১২৮ পাতার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তিকে ওয়াকফ তথা দানের জমি দিতে হলে তাঁকে অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করতে হবে। আইনের এই অংশটিতে স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে। কোনও ব্যক্তি অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করছেন কি না, তা নিয়ে রাজ্য সরকার বিধি তৈরি করবে। রাজ্য সরকারকে এই বিধি তৈরির অধিকার না দিলে অন্যায়ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে।
একইভাবে কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ বাঁধলে সেটি মেটানোর জন্য জেলাশাসককে দায়িত্ব দেওয়ার কথাই বলা আছে আইনে। দেশের প্রধান বিচারপতি এদিন তাঁর রায়ে আইনের এই অংশের উপরও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, জেলাশাসক সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এতে আইন, আদালত আর প্রশাসনকে দেওয়া ক্ষমতা (সেপারেশন অব পাওয়ার) লঙ্ঘন হবে। তাই আইনের এই অংশটিতে স্থগিতাদেশ দেওয়া হল।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের তৃতীয় উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে অ-মুসলমান সদস্য রাখা গেলেও তার সংখ্যা যেন কোনওভাবেই চারজনের বেশি না হয়। ২২ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ চারজন। একইভাবে রাজ্যের যে ওয়াকফ বোর্ড, সেখানেও মোট ১১ সদস্যের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনজন অ-মুসলমান সদস্য করা যাবে। ওয়াকফ বোর্ডের এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে যতটা সম্ভব মুসলিম কাউকেই করার চেষ্টা করতে হবে বলেই রায় শুনিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভূক্ত করার উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি।