• প্রবল বৃষ্টিতে সিগন্যালিং ব্যবস্থায় যান্ত্রিক ত্রুটি, থমকে ট্রেন, বনগাঁ শাখায় ফের দুর্ভোগ
    বর্তমান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন। আর সেদিনই দুর্ভোগে জেরবার হতে হল বারাসত, বনগাঁ ও হাসনাবাদ লাইনের যাত্রীদের। সিগন্যালিং ব্যবস্থায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বারবার থমকে গেল ট্রেন। ফলে কোনও ট্রেন আধঘণ্টা, কোনওটি আবার তারও বেশি দেরিতে চলল। লাইনের বিভিন্ন পয়েন্টে (লাইনের সঙ্গে সিগন্যালিং ব্যবস্থার যে সংযোগ) যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এই ভোগান্তি বলে জানা গিয়েছে। এদিন সকাল থেকে আপ এবং ডাউন লাইনে সমস্যা দেখা দেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দুপুর গড়িয়ে যায়। গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয় বহু যাত্রীর।  

    এদিন সকাল ১০টা ১৮ মিনিটের হাসনাবাদ-মাঝেরহাট লোকাল বিরাটি স্টেশনে ঢোকে ১০টা ৩৫মিনিট নাগাদ। সেই ট্রেন বিরাটি ছাড়ে বেশ কয়েকটি মিনিট পর। কারণ, ততক্ষণে দমদমে ঢোকার আগে বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বনগাঁ-শিয়ালদহ, দত্তপুকুর-শিয়ালদহ লোকাল। অবশেষে প্রায় ৫০ মিনিট পর সেই হাসনাবাদ-মাঝেরহাট লোকাল দমদম স্টেশনে ঢোকে। দমদমে যেটির সময় ১০টা ৩২ মিনিট থাকলেও ঘড়িতে তখন প্রায় ১১টা ১৫। দীর্ঘ অপেক্ষায় রীতিমতো ধৈর্যচ্যুতি ঘটে বহু যাত্রীর। অফিস টাইমের ব্যস্ত সময়ে নাকাল হতে হয় বনগাঁ, বারাসত, হাসনাবাদ লাইনের যাত্রীদের। দমদম থেকে বনগাঁগামী আপ লাইনেও এদিন একইরকম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।

    রেল জানিয়েছে, প্রায় সারা রাত, এমনকি সকালের দিকেও ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণেই এই বিপত্তি। লাইনের সঙ্গে সিগন্যালিং ব্যবস্থার যে সংযোগ থাকে, সেই সমস্ত পয়েন্টে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। যার ফলে দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত হয় পরিষেবা। তাছাড়া, দমদম ক্যান্টনমেন্টের ২-টি নম্বর রেলগেট প্রচুর গাড়িঘোড়ার চাপ থাকায় বন্ধ করাই যাচ্ছিল না প্রয়োজনমতো। সেই কারণেও কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে রেলের দাবি, কিছুটা দেরিতে চললেও কোনও লোকাল বাতিল করতে হয়নি। বারাসত লাইনের নিত্যযাত্রী তথা নিউ বারাকপুরের বাসিন্দা অলোক বসু বলেন, ‘নিউ বারাকপুর থেকে বিরাটি ঢুকেছি ২০ মিনিটে। ট্রেন চলছিল নাকি গরুর গাড়ি, বোঝা দায়। তারপর বিরাটি থেকে দমদম পৌঁছনোর পথে অন্তত পাঁচ-ছ’বার ট্রেন দাঁড়িয়েছে। শুনছি, সিগন্যাল ঠিকমতো কাজ করছিল না। আমাদের পিছনে পরপর কয়েকটি ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে।’ বারাসতের বাসিন্দা অমর চক্রবর্তী বলেন, ‘সকাল থেকেই তো এই পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে। অথচ কোনও স্টেশনেই অপেক্ষারত যাত্রীদের সেকথা জানানো হয়নি। মেট্রোর মতো রেল পরিষেবাটাও লাটে উঠছে।’

    যাত্রীরা ক্ষোভ উগরে দিয়ে আরও বলেন, ‘গত বছর পরপর দু’সপ্তাহ শনি ও রবিবার বহু ট্রেন বন্ধ রেখে রেল নাকি দমদমে সিগন্যালিং ব্যবস্থা, লাইনের বিভিন্ন পয়েন্টে মানোন্নয়নের কাজ করেছিল! এত কাঠখড় পুড়িয়ে কী কাজ হল, সেটাই তো এখন বোঝা যাচ্ছে না। উল্টে দিনের পর দিন রেলের পরিষবা আরও খারাপ হচ্ছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)