• কাজে যোগ দেওয়ার ১ বছর পর আধার, ৭ বছর পর ভোটার কার্ড! গাইঘাটা থানায় সিভিক ভলান্টিয়ারের নিয়োগ ঘিরে তুমুল বিতর্ক
    বর্তমান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রাজু চক্রবর্তী, কলকাতা: রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশ মিলিয়ে এই মুহূর্তে শূন্যপদের সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি। স্থায়ী পদে নিয়োগ বন্ধ থাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। যদিও প্রশিক্ষণহীন এই ভলান্টিয়ারদের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সময় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে সরকারকে। ফের সামনে এল সেরকমই এক ঘটনা! উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ারের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, যেদিন তাঁকে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে, তার ঠিক এক বছর পর তৈরি হয়েছে তাঁর আধার কার্ড। শুধু তাই নয়, তাঁর ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছে নিয়োগ পাওয়ার সাত বছর পর। তাহলে এই নিয়োগ কোন নথির ভিত্তিতে হল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এই অনিয়মের ব্যাপারে তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) তথ্য দিয়েছে খোদ প্রশাসনই। 

    ভবানী ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, গাইঘাটা থানায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার সুমন বণিকের সম্পর্কে এই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ২০১৩ সালে সিভিক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। অথচ খোদ জেলা প্রশাসনের নথিতে দেখা যাচ্ছে, সুমন বণিকের আধার কার্ড ইস্যু হয়েছে ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। এখানেই শেষ নয়, ২০২০ সালের ১৪ মার্চ তিনি সচিত্র পরিচয়পত্র বা ভোটার কার্ড পেয়েছেন। জেলা প্রশাসন লিখিতভাবে এই তথ্যই জানিয়েছে। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের বাবার নামে ভোটার কার্ড ইস্যু হয়েছে ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ ১৫ মার্চ। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি কোনও বৈধ সরকারি পরিচয়পত্র ছাড়াই সুমন বণিক সিভিকের চাকরি পেয়ে গেলেন? এক্ষেত্রে কি রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষপদে বসে থাকা কর্তারা দায় এড়াতে পারেন?  উঠছে এমন ‘অপ্রিয়’ প্রশ্নও। 

    উল্লেখ্য, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে অনুপ্রবেশ নিয়ে বিতর্ক লেগেই আছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন এসআইআরের মাধ্যমে ভোটার তালিকা থেকে ‘বেনোজল’ বাদ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। বাংলায়ও বিধানসভা ভোটের আগে এসআইআর হবে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের এমন বিতর্কিত নিয়োগ ঘিরে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা। যতদূর জানা গিয়েছে, ৬০ বছর বয়সে তাঁর বাবার আধার ও ভোটার কার্ড ইস্যু হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত সন্দেহজনক। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের কাছে এনিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।’ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য সুমন বণিকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের কোনও উত্তর দেননি তিনি।
  • Link to this news (বর্তমান)