গত কয়েক দিন ধরেই নেকড়ের আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছে বাহারাইচ। বন্যপ্রাণীদের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে দুই নাবালিকার। তিন বছরের এক শিশুকে টেনে নিয়ে গিয়েছে নেকড়ে। এর মধ্যে আবার বন্যপ্রাণীর আক্রমণ। এ বার সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন এক বৃদ্ধা। অন্য দিকে, ওই এলাকায় বাঘের হামলায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
বন বিভাগ এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় কাইজারগঞ্জ এলাকায় বন্যপ্রাণীর আক্রমণে একজন বয়স্ক মহিলা আহত হয়েছেন। সেখানকার নান্দওয়াল (কেশরীপূর্ব) এলাকায় তাঁর বাড়ির কাছেই আক্রান্ত হন ৭০ বছর বয়সি চন্দা দেবী। তাঁকে দ্রুত ফখরপুরের কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে পাঠানো হয় জেলা হাসপাতালে। গত সপ্তাহেই বাহারাইচ জেলার মাহসি তহসিলে একই রকমের আক্রমণে দুই শিশু নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
একের পর এক এই ঘটনায় আতঙ্ক বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে। বন বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কায়সারগঞ্জ এবং মাহসি এলাকায় ওই হিংস্র এবং বন্যপ্রাণীদের খুঁজে বের করে জন্য দিনরাত টহল দেওয়া হচ্ছে।
নেপাল সীমান্ত লাগোয়া বাহারাইচে অতীতেও নেকড়ের হানার ঘটনা ঘটেছিল। গত বছরই বাহারাইচে এক পাল নেকড়ের হামলায় অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়। নেকড়ের আক্রমণে গুরুতর জখম হন অনেকে। তবে যে প্রাণীটি এখন আক্রমণ চালাচ্ছে তা নেকড়ে কী না তাও জানার চেষ্টা করছেন আধিকারিকরা।
এলাকার বিভাগীয় বন আধিকারিক রাম সিং যাদব জানান, ড্রোন এবং অন্যান্য আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে এলাকায় টহল দেওয়া হচ্ছে। এরই পাশাপাশি ওই প্রাণীটির গতিবিধি শনাক্ত করার জন্য সংবেদনশীল স্থানে ক্যামেরা এবং সৌরশক্তিচালিত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ওই প্রাণীকে ধরার চেষ্টাও করা হচ্ছে সে সমস্ত এলাকায় ওই বন্যপ্রাণী থাকতে পারে সেখানে তিনটি খাঁচাও পেতেছে বনবিভাগের লোকজন।
অন্য দিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যেই বাহারাইচ এলাকায় ছড়িয়েছে বাঘের আতঙ্ক। রবিবার সন্ধ্যায় বাহারাইচের কাতারনিয়াঘাট অভয়ারণ্যের ধর্মপুর রেঞ্জে বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। মৃতের নাম ইন্দল নিশাদ (২৮)। তিনি ধর্মপুর রেঞ্জের হরখাপুর গ্রামের বাসিন্দা। রবিবার সন্ধ্যায় এলাকারই একটি খালের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই তাঁকে বাঘ আক্রমণ করে বন বিভাগের আধিকারিকদের জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। ওই যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ পরে উদ্ধার হয়। সেই ক্ষত দেখে বনদপ্তরের আধিকারিকদের ধারনা, বাঘের আক্রমণেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের।