সুন্দরবন ঘুরতে যাবেন? এবার থেকে মানতে হবে এই নির্দেশিকাগুলি...
আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুন্দরবন ভ্রমণ। তা সে ইলিশ উৎসব হোক আর শীতের মরসুমে হোক। জমে একেবারে ক্ষীর।
এটা ঘটনা, মরসুম ছাড়াও সারা বছরে চলতে থাকে পর্যটকদের ঢল। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে সুন্দরবনের জঙ্গলে প্রবেশের জন্য। ফলে নির্দিষ্ট দিনে অনুমতি না পেয়ে জঙ্গল সাফারি বন্ধ রাখতে হয় বহু পর্যটকদেরকে। এবার তাই পারমিশনের কালোবাজারি রুখতে এবং ভ্রমণার্থীদের জঙ্গলে ঘোরাতে ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ ব্যবস্থা। আগে থেকে কোনওভাবেই পর্যটক শূন্য জলযানকে অনুমতিপত্র দেওয়া যাবে না। অনুমতি পত্র নিতে হলে বিভিন্ন লঞ্চ এবং বোট মালিকদের নির্দিষ্ট ওটিপি মারফত তা কার্যকরী করতে হবে। এর ফলে একদিকে যেমন সঠিক ভ্রমণার্থীরা জঙ্গল ঘুরতে পারবেন তেমনি বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীরা যারা অনলাইনের মাধ্যমে সুন্দরবনের পারমিশন করছিল এবং অতিরিক্ত পয়সা বিক্রি করছিল তাদের কালোবাজারি বন্ধ হবে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়ত বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী একইসঙ্গে ১০ থেকে ১২ টি করে জলযানকে পারমিশন করিয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে ব্যাঘ্র প্রকল্পের অতিরিক্ত ফিল্ড ডিরেক্টর জন জাস্টিন বলেন, সমস্ত পারমিশন অনলাইনে হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল পারমিশন না পাওয়ার জন্য। এবং নির্দিষ্ট কিছু টুরিস্ট অপারেটর এবং সাইবার ক্যাফের বিরুদ্ধেই সেই অভিযোগ ছিল। এবার সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন সুন্দরবনে ঘুরতে আসা সমস্ত পর্যটকরা। কোনওরকম ভাবে আগে থেকে পর্যটক বিহীন বোট বা লঞ্চকে জঙ্গলে ঘোরার পারমিশন করানো যাবে না। তাছাড়া একবার পারমিশন হয়ে গেলে তার বদল হবে না। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকজনের জন্যই তা বদল করা যাবে। সংখ্যাটা ৬ থেকে ৮ জনের বেশি নয়। শুধু তাই নয় পাখিরালয়, দয়াপুর এবং গোসাবার বেশ কিছু সাইবার ক্যাফের মালিকদের বিরুদ্ধেও পারমিশন ব্লক করার অভিযোগ উঠেছে। আর তাই ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগে থেকেই পারমিশন ব্লক করতে গেলে টুরিস্টদের পুরো নামের তালিকা আধার কার্ড নম্বর অথবা অন্য কোনও পরিচয় পত্র দিতে হবে পারমিশনের সঙ্গে। জঙ্গলে প্রবেশের আগে নির্দিষ্ট অফিসে তা দেখিয়ে নিতে হবে। অনলাইন অনুমতির সময় যে পর্যটকদের নাম এবং ঠিকানা বা পরিচয় পত্র আপলোড করা হয়েছিল সেগুলি যথাযথ আছে কিনা তাও দেখিয়ে নিতে হবে। কোনওরকমভাবে অসৎ পথ অবলম্বন করলে নির্দিষ্ট জলযানের মালিকদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। অনিয়ম করলে এবং এক মাসে দু’বার তা প্রমাণিত হলে নির্দিষ্ট জলযানের সরকারি অনুমতি এক মাসের জন্য বন্ধ রাখা হবে। অর্থাৎ ওই জলযান কোনওভাবেই আর সুন্দরবনের প্রবেশ করতে পারবে না এক মাস যাবত।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বোট মালিক টুর অপারেটর এবং হোটেল মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি এই অনুমতি পত্র বন্ধ করার জন্য বারবার আবেদন জানাচ্ছিলেন ব্যাঘ্র প্রকল্পের কাছে। তাদের কথায় সম্মতি দিয়েই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফ থেকে।
প্রকল্পের সূত্র খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের জঙ্গলে ঘোরার জন্য কোনওরকম পারমিশন খরচ সরকারকে দিতে হয় না অর্থাৎ পয়সা খরচ করতে হয় না। এর ফলে সুন্দরবন ভ্রমণের খরচ কিছুটা কম হলেও অনুমতি পত্রের কালোবাজারি সুন্দরবন ঘোরার পক্ষে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ইতিমধ্যেই সুন্দরবন নিয়ে পর্যটকদের উৎসাহর খামতি নেই। ইলিশ উৎসব থেকে সুন্দরবনের শীতের ভ্রমণ সবই চলছে নিয়ম করে। পর্যটনের অনুমতির ব্যাপারে ব্যাঘ্র প্রকল্পের দপ্তর কঠোর হওয়ার কারণে আরও বেশি সুষ্ঠুভাবে সুন্দরবন ভ্রমণ হবে বলেই আশা করছেন পর্যটক থেকে শুরু করে ট্যুর অপারেটররা।