আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত কয়েকদিনে একের পর এক নারী নির্যাতনের অভিযোগ। অভিযোগে উত্তাল ওড়িশা। দিনকয়েক আগেই গোপালপুর সমুদ্রসৈকত থেকে এক যুবতীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। তার কয়েকদিনের মাথায় ফের একই অভিযোগ। এবার খাস পুরী জেলায়। অভিযোগ, সমুদ্রসৈকতে গণধর্ষণ কলেজ ছাত্রীর। ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন, প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য তেমনটাই।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার নির্যাতিতা ওই তরুণী এবং তাঁর প্রেমিক বলিহারচণ্ডী মন্দিরের কাছে বসে ছিলেন। তখনই এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, কয়েকজন যুবক আচমকাই তাঁদের ছবি তোলেন, ভিডিও করতে শুরু করেন। আপত্তি করে, মুছে ফেলতে বলা হলে। কিন্তু ওই যুবকেরা রাজি হননি। উলটে তার জন্য নগদ টাকা দাবি করেন। অভিযোগ, বিপত্তি সেখানেই। শুরু হয় বিবাদ, তর্ক। অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, তাঁরা টাকা দেওয়ায় আপত্তি জানানোয়, তিনজনের দলের দু' জন তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করেন, ধর্ষণ করেন প্রেমিকের সামনেই। তিনজনের দলের এক যুবক, তাঁর প্রেমিককে গাছে বেঁধে রাখেন, তাঁকেও লাঞ্ছনা করা হয় বলে অভিযোগ।
শনিবারের ঘটনার পর, সোমবার যুবতী পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা সকলেই স্থানীয়। তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের আগে তাঁরা ফোন থেকে ছবি-ভিডিও মুছে ফেলেছেন বলেও জানা গিয়েছে।
পুরীর এই ঘটনা ফের মনে করিয়ে দিচ্ছে সাম্প্রতিককালে সে রাজ্যে ঘটে চলা একের পর এক অভিযোগ। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ওড়িশায় যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে ক্রমাগত। গত বুধবার ভুবনেশ্বরের একটি লজে তিনজন ব্যক্তি এক মহিলাকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, একজন গায়িকাকে একটি বড় গানের প্রোজেক্ট দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁকে সেই প্রসঙ্গে কথাবার্তা বলার জন্য লজে ডাকা হয়। অভিযোগ, সেখানেই তাঁর পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয় এবং তারপরেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়।
এর আগে, ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল ৫ সেপ্টেম্বর। অভিযোগ, ৫ সেপ্টেম্বর, কান্ধামলে একজন ১৪ বছর বয়সী নাবালিকা, তার বোনের বাড়িতে গণেশ প্রতিমা বিসর্জন দেখতে যাচ্ছিল, তাকে ২৮ বছর বয়সী এক যুবক ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ওই নাবালিকাকে নিজের গাড়িতে করে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে, ধর্ষণ করেন ওই যুবক। ঘটনার পাঁচদিন পর, অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত মাসে, ময়ূরভঞ্জে ১০ বছর বয়সী নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল পড়শি এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পাওয়ার পরে, যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১৪ সেপ্টেম্বর, ওড়িশার আরও একটি ঘটনা সামনে আসে। ময়ূরভঞ্জ জেলার কয়েকজন গ্রামবাসী এক মহিলা ও দুই যুবককে ইলেক্ট্রিক পোলে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহ ভয়ঙ্কর হেনস্থার শিকার হন ওই মহিলা ও দুই যুবক। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কাশিপুর গ্রামের এক বিবাহিত যুবতী দুই যুবকের সঙ্গে বাইকে চেপে জশিপুর মার্কেটে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ফেরার পরেই পরিবারের সদস্যরা দেখেন বিবাহিত ওই যুবতী দুই যুবকের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করছেন। তা থেকেই অশান্তি শুরু হয়। যুবতীর পরিবারের সন্দেহ, ওই দুই যুবকের মধ্যে একজনের সঙ্গে বিবাহিত যুবতী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত রয়েছেন। এরপরই তিনজনকে হাতেনাতে ধরে গ্রামবাসীরা একটি ইলেক্ট্রিক পোলে বেঁধে ফেলেন। দুই যুবক ও ওই বিবাহিত যুবতীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।