আজকাল ওয়েবডেস্ক: শয্যায় শোয়ানো বৃদ্ধার 'মরদেহ'। চোখে তুলসিপাতা। কপালে চন্দন। গলায় ফুলের মালা। শেষকৃত্যের আগে বৃদ্ধাকে ঘিরে হাউমাউ করে কেঁদে ভাসালেন পরিবারের সদস্যরা। ঠিক তখনই চমকে গেলেন সকলে। আচমকাই নড়ে উঠল 'মৃত' বৃদ্ধার পা। ব্যাস! সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে জ্ঞান ফিরল তাঁর!
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার পুরীতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮৬ বছরের বৃদ্ধা দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে ভুগছিলেন। সোমবার তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখেই সকলের মনে হয়েছিল বৃদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন। সেদিনই শ্মশানে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষকৃত্যের কাজ অর্ধেক শেষ হয়ে গিয়েছিল। চিতায় আগুন জ্বালানোর ঠিক কয়েক মিনিট আগেই সেটি নড়ে উঠতে দেখা যায়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধার নাম পি লক্ষ্মী। তিনি আদতে অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। দিন কয়েক আগে ওড়িশার গাঞ্জাম জেলায় পোলাসারা এলাকায় জামাইয়ের বাড়িতে ঘুরতে এসেছিলেন। সোমবারেই ঘটে বিপত্তি। সেদিন বৃদ্ধাকে শ্বাস নিতে দেখা যায়নি। চোখটিও বন্ধ ছিল। তা দেখেই পরিবারের সদস্যদের অনুমান হয়েছিল, বৃদ্ধা সম্ভবত মারা গেছেন।
এরপর স্থানীয়দের ডেকে বৃদ্ধাকে একটি গাড়িতে তুলে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্মশানে পৌঁছনোর পর শেষকৃত্যের আয়োজন করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। সেই সময়েই নিরাপত্তারক্ষী দেখেন চিতার কাঠ নড়ছে। এমনকী পরিবারের সদস্যরা কোনও ডেথ সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি। সেই সময় বৃদ্ধার ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয় পরিবারকে। তখনই চিতা নড়াচড়া করতে দেখা যায়।
সমস্ত কাঠ সরিয়ে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয়। তড়িঘড়ি করে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে পুরী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর হার্ট ও কিডনির স্বাস্থ্য ভাল নেই। তবে কাজ করছে। কিন্তু মস্তিষ্ক ঠিক মতো কাজ করছে না।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসেই এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল মহারাষ্ট্রে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের থানে জেলার উল্লাসনগরে। পরিবার জানিয়েছে, ৭০ বছরের অভিমান নামের বৃদ্ধ দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে আক্রান্ত। জেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ১৫ দিন আগে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। শনিবার সকালে হঠাৎ স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। কোনও জ্ঞান না থাকায় বৃদ্ধকে অটোরিক্সায় নিয়ে শিবনেরি হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার।
সেই হাসপাতালের বাইরেই বৃদ্ধকে পরীক্ষা করেন এক চিকিৎসক। তাঁকে মৃত বলেও ঘোষণা করেন। হাসপাতালের তরফে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়ার আগেই বৃদ্ধের পা নড়ে ওঠে। তখনই স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানে বৃদ্ধকে জীবিত বলেই জানান চিকিৎসকরা।
যেদিন দুপুরে শেষকৃত্যের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই সময়েই পরিবারের সঙ্গে বসে খাবার খান বৃদ্ধ। এদিকে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তিনি জানান, বৃদ্ধকে ভেন্টিলেশনে রাখার জন্য পরিবারকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরাই ডেথ সার্টিফিকেট চান। নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন চিকিৎসক।