ছ’বছর ধরে সেবা করেছেন রাজ্যের, মহিলা সিভিল সার্ভিস অফিসারের বাড়িতে উদ্ধার ২ কোটি টাকা, সোনার গয়না...
আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: অসমে আবারও প্রশাসনিক দুর্নীতির ঘটনা সামনে এল। গ্রেপ্তার করা হল অসম সিভিল সার্ভিস (ACS) অফিসার নুপুর বোরাকে। মুখ্যমন্ত্রীর স্পেশাল ভিজিল্যান্স সেলের টানা অভিযানে তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকার নগদ অর্থ ও সোনার গয়না। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যে। ভিজিল্যান্স সূত্রে জানা গেছে, গুয়াহাটিতে ওই অফিসারের নিজ বাসভবন থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৯২ লক্ষ টাকা নগদ এবং ১ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সোনা ও হীরার গয়না। এছাড়া বারপেটার ভাড়া বাড়ি থেকেও উদ্ধার হয় আরও ১০ লক্ষ টাকা নগদ। বিপুল পরিমাণ এই সম্পত্তির উত্সধ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, নুপুর বোরাকে গত ছয় মাস ধরে নজরে রাখা হচ্ছিল। অভিযোগ, তিনি একাধিক বিতর্কিত জমি সংক্রান্ত লেনদেনে যুক্ত ছিলেন। জানা গিয়েছে, নুপুর বোরা ২০১৯ সালে অসম সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৮৯ সালের ৩১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন তিনি গোলাঘাট জেলায়। কটন কলেজে পড়াশোনা শেষে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক হন। সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি জেলা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (DIET)-এ লেকচারার হিসেবে কাজ করতেন। প্রশাসনিক কেরিয়ার শুরু হয় ২০১৯ সালের মার্চে, করবি আংলংয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার হিসেবে। চার বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর ২০২৩ সালের জুন মাসে তাঁকে বারপেটায় সার্কেল অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়। এরপর স্থানান্তরিত হয়ে আসেন কামরূপ জেলার গোরইমারিতে।
মাত্র ছ’বছরের প্রশাসনিক জীবনে এত বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভিজিল্যান্স। সরকারি বেতন ও আয়-রোজগারের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া সম্পদের কোনও মিল নেই বলেই দাবি তদন্তকারীদের। নুপুর বোরার পাশাপাশি তদন্তে নাম উঠে আসে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুরজিত দেকার নামও। বারপেটার রাজস্ব দপ্তরে কর্মরত সুরজিতের বাড়িতেও হানা দেয় ভিজিল্যান্স দল। বর্তমানে নুপুর বোরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর আয়, জমি লেনদেন ও অন্যান্য আর্থিক উৎসের খোঁজখবর নিচ্ছে ভিজিল্যান্স সেল। সূত্রের খবর, আরও কয়েকজন সরকারি কর্মচারী ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অসমে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুর্নীতি দমন অভিযানে একাধিক সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নুপুর বোরার গ্রেপ্তার সেই অভিযানেরই অংশ। তবে মাত্র ছ’বছরের চাকরিজীবনে এক তরুণী অফিসারের এত সম্পত্তি সংগ্রহের অভিযোগ সাধারণ মানুষের মনে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।