• বীরভূম-পুরুলিয়ায় আসন বাড়ানোর নির্দেশ অভিষেকের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • তৃণমূলের জয়ের পথে কাটা হতে পারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব? বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই কাটা উপড়ে ফেলতে বদ্ধপরিকর অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তাই প্রত্যেক জেলাওয়াড়ি বৈঠকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে সমন্বয় বার্তা দিচ্ছেন তিনি। এবার তাঁর নজরে পুরুলিয়া এবং বীরভূম সাংগঠনিক জেলা।

    শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বারংবার যে উত্তপ্ত হয়েছে বীরভূম, তা সর্বজনবিদিত। সোমবার ক্যামাক স্ট্রিটে আয়োজিত বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বৈঠকে কেষ্ট-কাজলের মধ্যকার দূরত্ব মেটানোর চেষ্টা করলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির উপস্থিতিতে অভিষেকের সাফ নির্দেশ, ‘সবাই মিলে একসঙ্গে এখানে বসে বৈঠক করছেন। এই ছবিই জেলায় রাখতে হবে। জেলার এক আসনেও হার নয়, সব আসন জিততে হবে এবার।’

    উল্লেখ্য, বীরভূমের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা চেয়ারম্যান আশিস ব্যানার্জী, কোর কমিটির সদস্য অনুব্রত মণ্ডল, বিকাশ রায়চৌধুরী, কাজল শেখরা। তাঁদের একসঙ্গে বসে আলোচনাকেই ‘উদাহরণযোগ্য ছবি’ বলে ব্যাখ্যা অভিষেকের। প্রসঙ্গত, বীরভূমের ১টি বাদে বাকি ১০টি আসনই তৃণমূলের ঝুলিতে। এমনকি, লোকসভার দুটি আসনেও ব্যবধান বাড়িয়ে জিতেছে ঘাসফুল শিবির। এদিনের বৈঠকেও সিউড়ি ২ ব্লকের সভাপতিকে ঘিরে কাজল এবং অনুব্রতর মধ্যে মৃদু বাদানুবাদ সৃষ্টি হয়। তবে অভিষেকের তৎপরতায় তা মিটেও যায়। সম্প্রতি কেষ্ট-কাজলের অনুগামীদের মধ্যে একাধিক বার দ্বন্দ্ব হয়েছিল নানুরকে কেন্দ্র করেই।

    তবে এদিনের বৈঠকে নানুর সংক্রান্ত কোনো বিষয় উঠল না। ব্লক সভাপতির পরিবর্তন নিয়েও আলোচনা করে অভিষেক জানিয়েছেন, ‘একাধিক নাম জমা পড়েছে। দায়িত্ব দেওয়ার আগে প্রত্যেকের রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক দক্ষতা খতিয়ে দেখা হবে।’ বৈঠক শেষে কাজল বলেন, ‘দল যাকে পাঠাবে, তাঁকেই আমরা বিধানসভায় জিতিয়ে পাঠাব।’ অনুব্রতর কথাতেও একই সুর, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় যেভাবে উন্নয়ন করেছেন, তাতে বিজেপি যতই কুৎসা করুক, ভোটে কিছু হবে না।’

    অন্যদিকে, পুরুলিয়ার ক্ষেত্রেও ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ অভিষেক। পুরুলিয়ায় বিজেপির সাংসদ থাকলেও তৃণমূলের ভোটের মার্জিন খুব একটা বেশি নয়, সেই ছবি মনে করিয়ে অভিষেকের স্পষ্ট বার্তা, ‘একসঙ্গে লড়লে পুরুলিয়ায় বিজেপিকে হারানো সম্ভব। জেলার কোনা-কোনা উন্নয়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তা সত্ত্বেও ভোটবাক্সে তার প্রতিফলন নেই কেন? সমন্বয়ের অভাব রয়েছে দলে! তা কাটিয়ে উঠতে হবে।’ পুরুলিয়ার ক্ষেত্রেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়াকড়ি হলেন তিনি।

    জানালেন, ‘বুথে বুথে সংগঠকদের যেতে হবে। বুথস্তরের কাজেই জোর দিতে হবে। স্থানীয় কর্মসূচি এবং সরকারি প্রকল্পগুলির সঠিক বাস্তবায়নের ওপর নজর দিতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের এলাকায় থাকতে হবে।’ এদিনের বৈঠকে নতুন-পুরোনো নেতৃত্বদের একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ তাঁর। পুরুলিয়ার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো, সভাপতি রাজীবলোচন সরেন-সহ প্রমুখ।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)