শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: কে যে কখন দলের পতাকা ধরে নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন মঞ্চে, তা জেলা সভাপতিও সবসময় জানতে পারছেন না। তাই এই ‘বেনো জল’ রুখতে এবং দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে যখন তখন যাকে খুশি দলে যোগদান করানো যাবে না বলে কড়া বার্তা দিলেন জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি সাংসদ খলিলুর রহমান নিজেই। জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সমস্ত বিধায়ক, ব্লক সভাপতির উদ্দেশ্যে সোমবার জারি করা নির্দেশিকায় অন্য রাজনৈতিক দল থেকে কেউ তৃণমূলে যোগদান করতে চাইলে কীভাবে তা করাতে হবে তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন। নির্দেশিকা না মেনে চললে তা অত্যন্ত গুরুতরভাবে বিবেচনা করা হবে বলে সাফ জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়।
জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলায় বেশ কিছুদিন ধরে স্থানীয় স্তরে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নেতা-কর্মীদের তৃণমূলে যোগদান করাচ্ছিলেন। কাদের যোগদান করানো হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে থাকছে না। এমনকী অভিযোগ উঠেছে দলের বিধায়করা তৃণমূলে যোগদান করালেও সেই সংক্রান্ত তথ্য জেলা নেতৃত্বকে জানাচ্ছেন না। রবিবার বিকেলে ফরাক্কা ব্লকের বেওয়া-২ অঞ্চলের তিলডাঙ্গায় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম এবং রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি বিধায়ক মোশারফ হোসেনের হাত ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে কয়েকশো কর্মী-সমর্থক তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন। অভিযোগ, সেই যোগদান সংক্রান্ত কোনও তথ্য সাংগঠনিক জেলা সভাপতি খলিলুর রহমানের কাছে ছিল না।
খলিলুর রহমান জানান, যোগদানের কোনও তথ্য তাঁকে জানানো হয়নি। এমনকি তাঁকে যোগদান সভায় যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি। দলের সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে একটি ‘কড়া’ নির্দেশিকা জারি করেন এবং সেই নির্দেশিকা পালন না করা হলে তা ‘অত্যন্ত গুরুতরভাবে বিবেচনা করা হবে’ বলে লিখিতভাবে ‘হুশিয়ারি’ দিয়েছেন তিনি। যদিও খলিলুর রহমানের এই নির্দেশিকা সামনে আসার পরে দলের মধ্যেই কানাঘুষো শুরু হয়েছে। জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান বিধায়ক জাকির হোসেন বলেন, “কলকাতায় বৈঠকের সময় এই সংক্রান্ত কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এই নির্দেশিকা জারি করার আগে আমাকে কিছুই জানাননি। কেন এই নির্দেশিকা জারি করেছেন তা উনিই বলতে পারবেন।” নবগ্রামের বিধায়ক কানাইচন্দ্র মন্ডল জানান, “আমার ধারণা উনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই এই নির্দেশিকা জারি করেছেন।” খলিলুর রহমান বলেন, “এই নির্দেশ আমার নয়। দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশই আমি জানিয়েছি। খুব শীঘ্রই জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলায় দলের সাংগঠনিক পদে কিছু পরিবর্তন হবে। তাই এখনই যেন কাউকে তৃণমূলে যোগদান না করানো হয়।”