কেষ্ট-কাজলকে একসঙ্গে কাজের বার্তা, পুরুলিয়ায় বিজেপির জেতা ৭ আসন পুনরুদ্ধারের নির্দেশ অভিষেকের
প্রতিদিন | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: রাঙামাটির দুই জেলা বীরভূম ও পুরুলিয়ার সব বিধানসভা কেন্দ্রেই জোড়াফুলের প্রার্থীদের জেতাতে সর্বস্তরের নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছেড়ে সার্বিক ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে নামতে হবে। বিশেষ করে পুরুলিয়ায় বিজেপির জেতা ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্র পুনরুদ্ধারে নবীন ও প্রবীণ নেতাদের একসঙ্গে পুজোর পর থেকেই বুথে বুথে, বাড়ি বাড়ি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। জেলাভিত্তিক সাংগঠনিক বৈঠকে সোমবার বীরভূম ও পুরুলিয়ার নেতাদের বিজেপির সাতটি আসন পুনরুদ্ধারে এমনই নির্দেশ দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবিরে অংশগ্রহণ নিয়ে পুরুলিয়ার তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃত্বের যে চরম উদাসীনতা সেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে শীর্ষ নেতৃত্ব। কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে সাংগঠনিক বৈঠকে অনুব্রত-কাজলদের সরাসরি অভিষেকের বার্তা, “সবাই মিলে এখানে একসঙ্গে বসে বৈঠক করছেন। এই ছবিই জেলায় রাখতে হবে। জেলার এক আসনেও হার চাই না। সব আসনেই জিততে হবে এবার।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে ১১টির মধ্যে ১০টি আসন জিতেছিল তৃণমূল। কিন্তু ২০২৬ সালে দুবরাজপুর আসনটিও বিজেপির হাত থেকে পুনরুদ্ধার করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সেনাপতি। বৈঠকে ছিলেন রাজ্য তৃণমূল সভাপতি সুব্রত বক্সিও। গত লোকসভা ও পঞ্চায়েত ভোটের ফল উল্লেখ করে অধিকাংশ ব্লকেই কেষ্টর হাতে তৈরি ব্লক সভাপতিরাই দক্ষ ও যোগ্য, সে রিপোর্ট আসে সমীক্ষা সংস্থার তরফে। বীরভূমের বৈঠকে জেলা তৃণমূলের আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও, শতাব্দী রায়, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিনহা-সহ কোর কমিটির সকল সদস্যই অংশ নেন। বৈঠকে সিউড়ি, রামপুরহাটের ব্লক সভাপতির নাম নিয়ে কেষ্ট-কাজল মতভেদ হয়। সিউড়ি-২ ব্লকের সভাপতি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হওয়ায় ইস্তফা দেওয়ায় নতুন দায়িত্ব দেওয়া নিয়েই বিতর্ক।
তবে কোর কমিটির সদস্যরা চাইছেন, একজন কাউকে দায়িত্বে না এনে তিনজনের কমিটি করে দেওয়া হোক। অবশ্য বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হাতে ছেড়েছেন অনুব্রতরা। কয়েকটি ব্লকে তৃণমূল ও শাখা সংগঠনের সভাপতি বদল হবে বলে ইঙ্গিত। বৈঠকে আলোচনায় কোর কমিটির সদস্যদের থেকে ব্লকে পরিবর্তিত নাম জানতে চান অভিষেক। নতুন দায়িত্ব দেওয়ার আগে প্রত্যেকের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতা খতিয়ে দেখা হবে বলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। পরে অনুব্রত জানান, “বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠন অতি শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রতিটি ব্লকে, প্রতিটি অঞ্চলে যেভাবে উন্নয়ন করেছেন, তাতে বিজেপি যতই কুৎসা করুক, ভোটে কিছু হবে না। ২০২৬ সালের ভোটে বীরভূম থেকে আমরা ১১-০ ফল তুলে দেব দিদির হাতে।” পুরুলিয়ার বৈঠকে গত লোকসভা ভোটে মাত্র ১৯ হাজার ভোটে আসন হারানোর পিছনে যে গোষ্ঠীকলহই দায়ী, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেয় শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে এক যুবনেতা অভিষেকের সামনেই পুরুলিয়া শহরের কাউন্সিলরদের লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থীর হয়ে কাজে অনীহা নিয়েও সরব হন।