রাজ্যে তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের শংসাপত্র পাওয়ার নিয়মে আসছে বড় পরিবর্তন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়া প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন। এতদিন সন্তানের জন্য এসসি শংসাপত্র পেতে মা ও বাবার কারও সার্টিফিকেট না থাকলে, রক্তের সম্পর্ক থাকা দুই আত্মীয়ের শংসাপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন নিয়মে সেই প্রক্রিয়া সহজ করা হচ্ছে। পরিবারের মধ্যে অন্তত একজনের এসসি শংসাপত্র থাকলেই আবেদনকারী একই সুবিধা পাবেন।
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যোগ্য কেউ যাতে সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন, এবং অযোগ্য কেউ যেন ফাঁকফোকর গলে ঢুকতে না পারেন, সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে। তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, সরকার ইতিমধ্যেই এসসি ও এসটি সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতি করেছে। এবার ভুয়ো এসসি শংসাপত্র বিলি করার পথ খুলে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে চাইছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে কোনও অসৎ খেলা হলে বিজেপি আন্দোলনে নামবে। প্রশাসনিক বৈঠকে মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির বাস্তবায়ন নিয়েও আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, দীর্ঘদিন অচল থাকা মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদকে সক্রিয় করা হোক। মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের আশ্বাস দেন।
পাশাপাশি, বাগদায় বি আর আম্বেদকরের নামে নির্মিত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি চালু করা এবং মালদায় বসবাসকারী মতুয়া উদ্বাস্তু পরিবারগুলিকে জমির পাট্টা প্রদানের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়গুলি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তরবঙ্গে ‘যোগ্যশ্রী’ প্রকল্প নিয়ে বৈঠকে অভিযোগ তোলেন জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়ন পর্ষদকে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন।