• দু'বার কামড়ালেই যাবজ্জীবন! পথকুকুরদের শায়েস্তা করতে কড়া নিয়ম জারি উত্তরপ্রদেশ সরকারের...
    আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কামড়ালেই এবার বন্দি হতে হবে পথকুকুরদের। উস্কানি ছাড়া প্রথমবার কামড়ালে ১০ দিনের জন্য বন্দি করা হবে। তারপরও যদি একই কাজ করে- তাহলে বন্দিদশার মেয়াদ হবে যাবজ্জীবন! আজীবন শাস্তির কোপে পড়া কুকুরদের কেউ যদি দত্তক নিতে চান তাহলেই তাদের বন্দি অবস্তা থেকে মুক্তি মিলবে। এক্ষেত্রে দত্তকধারীকে হলফনামা পেশ করতে হবে, সেখানে উল্লেখ থাকবে দত্তক নেওয়া কুকুরকে কখনও রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হবে না। কড়া এই নিয়ম জারি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। 

    গত ১০ সেপ্টেম্বর সমস্ত গ্রামীণ ও নগর নাগরিক সংস্থাকে প্রধান সচিব অমৃত অভিজাতের জারি করা আদেশে বলা হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তি বেওয়ারিশ কুকুর কামড়ানোর পরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা গ্রহণ করে, তবে ঘটনাটির তদন্ত করা হবে এবং কুকুরটিকে নিকটতম পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।

    প্রয়াগরাজ পৌরনিগমের পশুচিকিৎসক আধিকারিক ডা. বিজয় অমৃত রাজ বলেন, "পশু হাসপাতালে নিয়ে এসে প্রথমেই বেওয়ারিশ কুকুরটিকে জীবাণুমুক্ত করা হবে। কুকুরটিকে ১০ দিনের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হবে এবং তার আচরণ লক্ষ্য করা হবে। ছেড়ে দেওয়ার আগে, কুকুরটিকে মাইক্রোচিপ করা হবে। সেই চিপে তার সমস্ত বিবরণ থাকবে এবং আমরা তার অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হব।" 

    যদি একই কুকুর কোনও উসকানি ছাড়াই দ্বিতীয়বার কোনও মানুষকে কামড়ায়, তাহলে সেই পথকুকুরটিকে বাকি জীবনভর পশু সংরক্ষণ কেন্দ্রে রেখে দেওয়া হবে।

    উস্কানিমূলক আচরণ হয়েছে কিনা তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে? ডা. বিজয় অমৃত রাজ বলেন, "তিন জনের একটি কমিটি গঠন করা হবে, যার মধ্যে থাকবে এলাকার একজন পশুচিকিৎসক, এমন একজন পশুপ্রেমী যাঁর পশুদের নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা আছে এবং তাদের আচরণ বোঝেন এবং পৌরনিগমের একজন মনোনিত সদস্য। তাঁরা যাচাই করবেন যে, কুকুরের হামলা বিনা উস্কানিতে ছিল কিনা। কেউ পাথর ছুঁড়ে মারার পরে কুকুরটি কামড়ালে, তবে তা বিনা উস্কানিতে আক্রমণ হিসাবে বিবেচিত হবে না।"

    সরকারি আদেশে বলা হয়েছে যে, এই ধরনের কুকুর দত্তক নেওয়া যেতে পারে, তবে যে ব্যক্তি দত্তক নেবেন তার সমস্ত বিবরণ - নাম, ঠিকানা ইত্যাদি - প্রদান করতে হবে এবং একটি হলফনামা জমা দিতে হবে যে, কুকুরটিকে আর রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হবে না। কুকুরের মাইক্রোচিপের বিবরণও নোট করা হবে এবং যদি কুকুরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে দত্তক গ্রহণকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ আট সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি এবং জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের সমস্ত বেওয়ারিশ কুকুরকে আটক করে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। যা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। পরে ওই কঠোর রায় সংশোধন করা হয়। বৃহত্তর বেঞ্চ সংশোধিক রায়ে জানিয়েছিল, কুকুরগুলিকে জীবাণুমুক্ত করা উচিত, টিকা দেওয়া উচিত এবং তাদের আসল জায়গায় ছেড়ে দেওয়া উচিত। তবে জলাতঙ্কে আক্রান্ত বা আক্রমণাত্মক আচরণ করলে সেই কুকুরের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বলবৎ হবে না। সেই নির্দেশের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এবার উত্তরপ্রদেশ সরকার পথকুকুরদের যাবজ্জীবন বন্দিদশার আদেশ জারি করল। 
  • Link to this news (আজকাল)