রাস্তা জুড়ে গর্ত, বৃষ্টিতে আরও বেহাল দশা! পুজোর মুখে নবগ্রামে ভোগান্তি চরমে ...
আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বড় বড় গর্ত। তাতে জল ভরে খানাখন্দ। যেন ঝুঁকির পথ হয়ে রয়েছে নবগ্রামের রাস্তা। পুজোর আগে বেহাল রাস্তা কি ঠিক হবে? একনাগাড়ে বৃষ্টিই যে বাধা, তাই দাবি পঞ্চায়েতের। কোন্নগরের নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পুজোর আগে রাস্তা ও নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ এলাকার মানুষের। পুজোর আগে রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব নয় বলে জানালেন প্রধান।
সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। পুজোর কয়েকটা দিন সব দুঃখ ভুলে মানুষ মেতে ওঠে আনন্দে।কিন্তু নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মানুষের কাছে এবার দুর্গাপুজো যেন বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকার সমস্ত রাস্তা বেহাল। অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে।পুজোয় কীভাবে প্রতিমা দর্শন হবে, সেটা ভাবার আগে সকলকে ভাবতে হচ্ছে এত জল আর এমন বেহাল রাস্তা দিয়ে পুজোর সময় যাতায়াত করবেন কীভাবে।
এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় স্কুল। সেখানে প্রত্যেকদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রছাত্রীরা আসে পড়াশোনা করতে। কিন্তু এখন অভিভাবকদের ভাবাচ্ছে এলাকার রাস্তার যা হাল, তাতে যেকোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠালেও আতঙ্ক কাটছে না।
দীর্ঘ আড়াই বছর হয়ে গেছে নতুন বোর্ড হয়েছে। কিন্তু সব কিছু হলেও মানুষের পরিষেবা নিয়ে হয়নি কিছুই। আর তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। এর আগে তৃণমূলের যাঁরা পঞ্চায়েত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, সেই পঞ্চায়েত প্রধানরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার রাস্তা ও নিকাশি সমস্যা নিয়ে।
আগে কখনও নবগ্রাম এলাকার এমন বেহাল অবস্থা হয়নি বলেই জানিয়েছেন এলাকার প্রবীণ নাগরিকরা।
নবগ্রাম এলাকার বেহাল অবস্থা নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান সোমা দাস বলেন, 'হ্যাঁ এই কথাটা সত্যি যে এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। এই এলাকায় বেশ কয়েকটা স্কুল রয়েছে। যেকোনও সময় হয়তো কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যেটা খুবই আতঙ্কের। তাই স্কুলের বাচ্চারা এখন একটু যদি অন্য কোনও রাস্তা দিয়ে ঘুরে স্কুলে যায় সেটাই ভাল। অনেক রাস্তা রিপেয়ার করা হয়েছে। কিন্তু এবছর বৃষ্টি খুবই বেশি তাই ঠিক ভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা করলেও পুজোর আগে রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করা হয়তো সম্ভব হবে না। চেষ্টা করছেন যাতে তাড়াতাড়ি কাজ করা সম্ভব হয়।'
এই বিষয়ে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রাজেশ রজক বলেন, 'নবগ্রাম পঞ্চায়েত তোলাবাজি আর মানুষের থেকে ট্যাক্স কালেকশনে ফাস্ট আর মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে লাস্ট। এলাকায় দেখা যাচ্ছে যে এখন যিনি প্রধান রয়েছেন তিনি সিপিএম আর প্রোমোটারদের নিয়ে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। আগে কখনও নবগ্রাম এলাকার এত খারাপ অবস্থা হয়নি।'
নবগ্রামের এই বেহাল অবস্থা নিয়ে সিপিএম দলের পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা জয়দীপ মুখার্জী বলেন, 'এই পঞ্চায়েত প্রধান পঞ্চায়েত চালানোর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তারা পঞ্চায়েতের বোর্ড মিটিং থেকে এলাকায় মিছিল সহ বিভিন্ন ভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এলাকার রাস্তাঘাট আর নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আর প্রধান তো ব্যর্থই। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকেও এর দায় নিতে হবে। পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, বিধায়ক, সাংসদ সব তৃণমূলের দায় সম্পূর্ণ তৃণমূলকে নিতে হবে।'
নবগ্রাম এলাকার এই বেহাল অবস্থা নিয়ে স্থানীয় স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব মজুমদার বলেন, 'এটা সত্যি কথা আগে কখনও নবগ্রাম এলাকার রাস্তাঘাট এত বেহাল অবস্থায় থাকেনি। তবে কেন্দ্রের কিছু টাকা আটকে আছে। বুঝতে পারছি না যে সব পঞ্চায়েত এলাকায় অনলাইনে ট্যাক্স নেওয়া শুরু হয়ে গেলেও নবগ্রাম পঞ্চায়েতের কিসের সমস্যা হচ্ছে। নবগ্রাম এলাকার সব রাস্তার অবস্থাই খারাপ।'
স্থানীয় বাসিন্দা গনেশ সাহা বলেন, 'এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তায় যাতায়াত করা যায় না। আগে কখনও এমন অবস্থা দেখা যায়নি।সামনেই পুজো। কীভাবে যে এই রাস্তায় মানুষ যাতায়াত করবেন, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না।'