ভালবাসা মানে না বাধা, ইনস্টাগ্রামে আলাপ থেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসা, দুই মহিলার সংসার ঘিরে দুবরাজপুরে চাঞ্চল্য...
আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সামাজিক মাধ্যমে প্রেম থেকে বিয়ের পথে দুই মহিলার সম্পর্ক ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল বীরভূমের দুবরাজপুরে। খয়রাশোলের বাসিন্দা সুস্মিতা চ্যাটার্জির টানে সুদূর মালদা থেকে ছুটে এলেন নমিতা দাস। সাতদিন আগে দুবরাজপুরের একটি শিবমন্দিরে সিঁদুর দান করে বৈবাহিক জীবনে পা রাখলেন এই যুগল।
জানা গিয়েছে, নমিতা দাসের বয়স ৩১ বছর। কয়েক বছর আগেই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর। চার বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে নমিতার। অন্যদিকে, ২৮ বছর বয়সী সুস্মিতা চ্যাটার্জিও বিবাহবিচ্ছিন্না। তাঁর আট বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শিশুটি বাবার সঙ্গেই থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
নমিতা জানান, তিন বছর আগে ইনস্টাগ্রামে সুস্মিতার পরিচয় হয়। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে প্রেমের সূত্রপাত। গত দুই বছরে তাঁদের সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়। তখনই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন একে অপরকে বিয়ে করবেন। সমস্ত আইনি কাগজপত্রের ব্যবস্থা সেরে অবশেষে মন্দিরে বিবাহ সম্পন্ন করেন তাঁরা।
নমিতা বর্তমানে কলকাতায় কর্মসূত্রে থাকেন। বাবা-মা প্রয়াত হওয়ায় তাঁর পরিবারে কেউ নেই। তবে সুস্মিতার বাবা-মা এই সম্পর্ক মেনে নিয়েছেন। বিয়ের পর দু’জনে কলকাতায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান নবদম্পতি।
দুই মহিলার বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়। তাঁদের দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু হওয়া এই প্রেমের কাহিনি শেষ পর্যন্ত বিয়ের মাধ্যমে রূপ পেল জীবনের নতুন অধ্যায়ে।
একই রকম একটি ঘটেছিল কোচবিহারের ফালাকাটায়। কিন্তু সেই যুগলের সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। তিন বছরের প্রেম ছিল তাঁদের। প্রেমের টানে সংসার পাতার স্বপ্ন নিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন অপর তরুণী। তারা দু’জনেই একে অপরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যুগলের ইচ্ছেকে মান্যতা দিতে নারাজ ছিল দুই পরিবার। কিন্তু বিয়ের দাবিতে অনড় ছিলেন দুই সমকামী তরুণী। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশে খবর দেন দুই পরিবারের লোকজন। পুলিশ দু’জনকে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল, ফালাকাটা থানা এলাকার বছর ২১-এর তরুণী স্বপ্না রায়ের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক মাথাভাঙ্গা ২ ব্লকের পারডুবি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক তরুণী স্মৃতি বর্মনের (নাম পরিবর্তিত)। স্বপ্না একদিন হঠাৎ চলে আসেন স্মৃতির বাড়িতে। স্বপ্না জানান, স্মৃতিকে বিয়ে করে তিনি সংসার পাতবেন। আর এতেই আপত্তি জানায় স্মৃতির পরিবার। অনেক বোঝানোর পরেও স্মৃতিকে ছেড়ে নিজের বাড়ি ফিরতে অস্বীকার করেন স্বপ্না। খবর দেওয়া হয় তাঁর পরিবারের সদস্যদের। পরিজনরা এসেও ফিরিয়ে নিয়ে যেতে না পারায় খবর দেওয়া হয় ঘোকসাডাঙ্গা থানায়। পরে পুলিশ এসে দু’জনকে থানায় নিয়ে যায়।
এই বিষয়ে স্বপ্না ও স্মৃতি পুলিশকে জানায়, গত ৩ বছর ধরে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক। দু’জনে একই কলেজে পড়ার সময়ে গড়ে উঠেছিল এই ভালবাসা। দুই বাড়ি থেকেই দু’জনকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়ার জন্য পরিবারের লোকেরা চাপ সৃষ্টি করছে বলে তাঁদের অভিযোগ। আর সে কারণেই তাঁরা একে অপরকে বিয়ে করে সংসার পাতার স্বপ্ন দেখছেন। তাঁদের দাবি ছিল, যেহেতু তাঁরা প্রাপ্তবয়ষ্ক, তাই তাঁদের সিদ্ধান্তে বাঁধা দেওয়ার অধিকার কারও নেই।