• সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর পাকিস্তান, নতুন ভিডিও নিয়ে চাঞ্চল্য তুঙ্গে...
    আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোট তহসিলের হাবিবুল্লাহ শহরে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত এক ধর্মীয় সমাবেশে ভারতবিরোধী ও জঙ্গিবাদ-সমর্থক স্লোগান দেওয়া হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।

    এটি ছিল ৩৮ তম বার্ষিক ‘মিশন মুস্তফা’ সম্মেলন, যেখানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। এনডিটিভি সূত্রে খবর, সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এই সম্মেলনে পাকিস্তানের বিভিন্ন ইসলামি নেতা অংশ নিয়ে বক্তৃতা দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুষ্ঠান জীবন ও শিক্ষার উপর কেন্দ্রীভূত বলা হলেও, গোয়েন্দাদের মতে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল অন্যকিছু।

    কিন্তু সবচেয়ে আলোচিত হয় জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরির একটি ভিডিও ভাষণ। জইশ-এর প্রতিষ্ঠাতা মওলানা মসুদ আজহার, যিনি ভারতের উপর একাধিক সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে, তাকে নিয়ে তিনি বলেন, “আজহার হচ্ছেন বিশ্বের প্রতিরোধের প্রতীক, যাঁকে ওয়াশিংটন থেকে মস্কো পর্যন্ত আলোচনা করা হয়।” তিনি আরও দাবি করেন, দিল্লি তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করলেও পাকিস্তানের ভূখণ্ড রক্ষার ২৫ বছরের সংগ্রামে তিনি এক ঐতিহাসিক নেতা।

    তিনি স্বীকার করেন যে, ভারত-বিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসেবে তারা দিল্লি, কাবুল ও কন্দহার পর্যন্ত লড়াই করেছে। তিনি অভিযোগ তোলেন, ৭ মে ভারতীয় সেনাদের অভিযানে (অপারেশন সিন্দুর) মাসুদ আজহারের পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। উল্লেখ্য, ওই অভিযানে ভারতীয় সেনারা পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জইশসহ একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে। ভারত জানিয়েছে, সব টার্গেট আগে থেকে যাচাই করে আক্রমণ চালানো হয়েছিল এবং প্রাণহানি এড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে আজহার দাবি করেছিলেন, ওই অভিযানে তার পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হয়।

    এই ভাষণে আরও বলা হয়, “অস্বীকার নয়, বরং একে বিস্তার ঘটাতে হবে। এমনকি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকেও লক্ষ্যবস্তু বানাতে হবে।” তার এই বক্তব্য ভারতের কাছে প্রমাণ হিসেবে ধরা হয়েছে যে, পাকিস্তান এখনও জঙ্গিবাদকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন করে।

    কে এই মাসুদ আজহার?মাসুদ আজহার ভারতের মোস্ট-ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। ২০০১ সালের সংসদ ভবন হামলা ও ২০০৮ সালের মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলার সঙ্গে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগ ছিল। জাতিসংঘ ২০১৯ সালে তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করে।

    ১৯৯৯ সালে কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনার পর ভারত সরকারকে বাধ্য হয়ে তাকে মুক্তি দিতে হয়। তারপর থেকে তিনি পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন। ভারত বহুবার পাকিস্তানকে তাকে এবং লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ সাঈদকে হস্তান্তরের দাবি জানালেও ইসলামাবাদ এবিষয়ে অজ্ঞতার ভান করেছে। এমনকি চলতি বছরের জুলাইয়ে এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানি রাজনীতিক বিলাওয়াল ভুট্টো দাবি করেন, আজহার হয়তো আফগানিস্তানে আছেন।

    ভারতীয় গোয়েন্দা মহল বলছে, বালাকোটের সাম্প্রতিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতা শুধু পাকিস্তানের জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার প্রমাণই নয়, বরং নতুন করে সীমান্ত অস্থিতিশীল করার এক দিক ফের সামনে এনে দিল।
  • Link to this news (আজকাল)