• লিঙ্গ নিয়ে টানাপোড়েনেই জেরে নিজের যৌনাঙ্গই কেটে ফেলল যুবক!
    আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রয়াগরাজের এক কিশোর ইউপিএসসি পরীক্ষার্থী বর্তমানে হাসপাতালে জীবনযুদ্ধ চালাচ্ছেন। ১৭ বছরের এই কিশোর দীর্ঘদিন ধরে মনে করতেন, তিনি আসলে মেয়ের শরীরে আটকে থাকা এক ছেলে। সেই অস্বস্তি ও মানসিক যন্ত্রণার কারণে এক চরম পদক্ষেপ নেন তিনি—নিজেই কেটে ফেলেন নিজের যৌনাঙ্গ।

    কিশোরের বাবা একজন কৃষক, মা গৃহিণী। পরিবারের কাছে তিনি ছিলেন IAS হওয়ার স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু। সিবিএসই বোর্ডে পড়াশোনা শেষে প্রয়াগরাজে কোচিং নিতে আসেন। কিন্তু প্রস্তুতির পথে পড়াশোনার চেয়ে লিঙ্গ পরিচয়ের সংকট তাঁকে বেশি ভারাক্রান্ত করে তোলে।ডাক্তারদের কাছে কিশোর জানান, প্রথমবার আলাদা অনুভূতি হয়েছিল ১৪ বছর বয়সে, স্কুলের এক অনুষ্ঠানে মেয়েদের সঙ্গে নাচতে গিয়ে। তখন থেকেই তিনি বুঝতে শুরু করেন যে নিজের পরিচয়ের সঙ্গে জন্মগত শরীরের অমিল রয়েছে। কিন্তু পরিবারে জানালে প্রত্যাখ্যাত হতে পারেন এই ভয়ে এতদিন নীরব ছিলেন।

    ইন্টারনেটে খোঁজ ও স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তিনি। প্রয়াগরাজে এসে তিনি ইন্টারনেটে খোঁজ করতে থাকেন, কীভাবে ছেলে থেকে মেয়ে হওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিও ও অনলাইন তথ্য ঘাঁটতে ঘাঁটতে যোগাযোগ করেন স্থানীয় এক চিকিৎসকের সঙ্গে। ওই চিকিৎসক, যাঁর নাম ডা. জেনিথ বলে প্রকাশিত হয়েছে, অভিযোগ অনুযায়ী তাঁকে নিজের যৌনাঙ্গ কেটে ফেলার পরামর্শ দেন এবং প্রাথমিকভাবে কীভাবে তা করা যায় তাও জানান।

    এরপরেই আত্মঘাতী পদক্ষেপ নেন তিনি। এরপর কিশোর একা ঘরে বসে অ্যানাস্থেশিয়া, সার্জিক্যাল ব্লেড ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জোগাড় করে। নিজের শরীরে অ্যানাস্থেশিয়া ইনজেক্ট করার পর অস্ত্রোপচার চালাতে গিয়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণায় পড়েন তিনি। রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকলে আতঙ্কিত হয়ে সাহায্য চান। বাড়িওয়ালা অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাঁকে প্রথমে তেজ বাহাদুর সপ্রু হাসপাতালে নিয়ে যান, পরে স্থানান্তরিত করা হয় স্বরূপ রানি নেহরু হাসপাতালে।

    চিকিৎসকদের মতে, এমন পদক্ষেপ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এবং প্রাণঘাতী হতে পারত। সার্জনরা আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল করেছেন এবং নতুন মূত্রনালী তৈরি করার চেষ্টা করছেন। কিশোরের মা চিকিৎসকদের কাছে বারবার অনুরোধ করেছেন ছেলেকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। তবে ডাক্তাররা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এখন প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শ।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, লিঙ্গ পরিচয়ের সংকট (Gender Identity Disorder) অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। সমাজে সচেতনতা ও পরামর্শকেন্দ্রের অভাবে বহু মানুষ নীরবে ভুগে থাকেন। সঠিক চিকিৎসা, কাউন্সেলিং এবং পরিবারের সহায়তা ছাড়া এ ধরনের পরিস্থিতি মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
  • Link to this news (আজকাল)