ফিরদৌস হাসান, শ্রীনগর: পরপর ঠায় দাঁড়িয়ে অন্তত এক হাজার ট্রাক। তাতে বোঝাই করা বাক্স বাক্স আপেল। এক-দু’ঘণ্টা নয়, প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে এইভাবেই শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাকগুলি। এর ফলে দেশজুড়ে ব্যাহত হয়েছে কাশ্মীরি আপেলের জোগান। জম্মু ও কাশ্মীরের আপেল চাষিদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আপেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি? জানা গিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে আগস্টের শেষ দিক থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই হাইওয়ে সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। পরে আংশিকভাবে তা খোলা হয়েছে। তবে কেবল ছোট গাড়ি চলাচলের জন্য। ফলে আটকে পড়েছে ভারী ট্রাকগুলি। কৃষকরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ ট্রাকেই রয়েছে ভালো মানের আপেল। সংরক্ষণের অভাবে সেগুলিতে পচন ধরতেও শুরু করেছে। এর ফলে লাভবান হয়েছে হিমাচল প্রদেশের আপেল ব্যবসায়ীরা। কাশ্মীরি আপেলের জোগান কমে যাওয়ায় হিমাচলে আপেলের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে বলে খবর। গত বছর রয়্যাল ডেলিশিয়াস আপেলের দাম ছিল বাক্স প্রতি দেড় হাজার টাকা। এ বছর তা আড়াই হাজার টাকায় পৌঁছে গিয়েছে।
কাশ্মীর ভ্যালি ফ্রুট গ্রোয়ার্স, ডিলার্স ইউনিয়নের চেয়ারপার্সন বশির আহমেদ বশির বলেন, ‘এটি আপেলের মরশুম। তখনই এমন ঘটনা উদ্যানপালন সেক্টরের জন্য বিরাট ধাক্কা। এভাবে ট্রাকে থাকতে থাকতে বহু আপেলে পচন ধরা শুরু হয়েছে।’ সাধারণত প্রতিদিন শ্রীনগর থেকে দেড়হাজার ট্রাক আপেল বাইরে যায়। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় সেই প্রক্রিয়া বন্ধ। অবস্থা সামাল দিতে কৃষি উৎপাদন ও উদ্যান পালন দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ দার রামবন ও উধমপুরে জাতীয় সড়কের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা ও ট্রাফিক আইজিপিকে তিনি অনুরোধ করেছেন, অন্তত দু’দিনের জন্য একমুখী ট্রাফিক চালু করা হোক। শ্রীনগর থেকে জম্মু পর্যন্ত আটকে থাকা ট্রাকগুলি যেন অন্তত ছেড়ে দেওয়া হয়। নিজস্ব চিত্র