• ময়নাগুড়ির সরকার বাড়িতে কন্যা রূপে পুজো পান দেবী মহামায়া, ভোগ রান্না হয় লবণ ছাড়াই
    বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সোমনাথ চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: ১৮৭০ সালে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার ইচাইল গ্রামে রামগতি সরকার মহালয়ার দিন ভোরে মহামায়ার স্বপ্নাদেশ পান। এমনকী প্রতিমা কোথায় পাওয়া যাবে সেটাও সেই স্বপ্নাদেশে বলে দেওয়া হয়েছিল স্বর্গীয় রামগতিবাবুকে। রামগতিবাবুর কোনও কন্যা সন্তান ছিল না। মা মহামায়া কন্যা রূপে রামগতি সরকারকে স্বপ্নে দর্শন দিয়েছিলেন। আর এরপর থেকেই কন্যা রূপে সরকার বাড়িতে শুরু হয় দেবী দুর্গার পুজো। পরবর্তীতে সরকার বাড়ির বংশধররা ওপার বাংলা ছেড়ে এপার বাংলায় চলে আসেন। ময়নাগুড়ির হাসপাতাল পাড়ায় শুরু হয় সরকার বাড়ির পুজো। 

    ১৯৭৯ সালে এই পুজো শুরু হয় শহিদগড়  স্কুল পাড়ায়। পাড়াটি এখন ময়নাগুড়ি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। সরকার বাড়ির এই পুজোয় রীতি অনুযায়ী লবণ দিয়ে কোনও ভোগ রান্না হয় না। সে কারণে মিষ্টি জাতীয় ভোগ রান্না হয়। এই ভোগ রান্নার জন্য বাইরে থেকে কাউকে নিয়ে আসা হয় না। বাড়ির মহিলা সদস্যরাই ভোগ রান্না করেন। ভোগ রান্না করার সময় তাঁরা একে অপরের সঙ্গে কোনও কথা বলেন না। সরকার বাড়ির প্রতিমা একটু অন্যভাবেই সাজানো। সাধারণত লক্ষ্মীর পাশে গণেশ  থাকেন। সরকার বাড়ির প্রতিমায় সরস্বতীর পাশে থাকেন গনেশ। বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন জীবন সরকার। এছাড়াও পরিবারের সদস্য অনিতা সরকার, সৌভিক সরকার, কৌশিক সরকার, অনির্বাণ সরকার, নন্দিতা গোস্বামী সরকার ও অপরাজিতা সরকার সহ অন্যান্য সদস্যরা একত্রিত হয়ে এই পুজার আয়োজন করেন।

    সরকার বাড়ির প্রতিমা তৈরি করছেন বিপুল পাল। স্থায়ী মণ্ডপে মায়ের পুজো হলেও পাশে যে মণ্ডপ তৈরি হয় সেটা তৈরি করছেন প্রদ্যুৎ বিশ্বাস। সৌভিক সরকার বলেন, মা দুর্গাকে বাড়ির মেয়ে রূপে পুজো করা হয়। দেবী দুর্গাকে আমরা যখন আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি তখন মন্দিরের সামনে শীতল পাটির উপর বসিয়ে চালুন বাতি দিয়ে বরণ করা হয়। পুজোর দিনগুলি ভীষণ আনন্দ হয়। পরিবারের সমস্ত সদস্য একত্রিত হই।   ফাইল চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)