• পাহাড়ে বৃষ্টি, ধসে বিধ্বস্ত দার্জিলিং তিস্তাবাজার জলমগ্ন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ, শিলিগুড়ি-সিকিম সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন
    বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত পাহাড় ও সমতল। ধসের জেরে মঙ্গলবার শিলিগুড়ি সহ দেশের সমতল ভাগ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন সিকিম। উত্তরবঙ্গের শৈলশহর দার্জিলিংয়েরও ২১টি জায়গা ধস বিধ্বস্ত। এতে একাধিক বাড়ি ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। এদিনও চালু হয়নি টয় ট্রেন পরিষেবা। একইসঙ্গে আরও জলস্ফীতি তিস্তা ও জলঢাকা নদীতে। এদিন সকালে জলের তলায় চলে যায় তিস্তাবাজারের ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক।  নতুন করে তিস্তা, তোর্সা ও ডায়না নদীর পাড়, বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    উত্তরকন্যার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের এক অফিসার বলেন, পাহাড় ও সমতলে বৃষ্টির জেরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ধস সরাতে পাহাড়ে প্রশাসনের যৌথ টিম এবং সমতলে নদীর পাড়, বাঁধ মেরামতিতে বিশেষ টিম ঝাঁপিয়েছে। সমগ্র পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। 

    কয়েকদিন আগে সিকিমের গেইজিংয়ে পর পর দু’দিনের ধসে চাপা পড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এদিন সকালে সিকিমের রংপো ও সিংথামের মাঝে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বারদংয়ে ধস নামে। নুড়ি, বোল্ডার, মাটিতে ঢেকে যায় জাতীয় সড়ক। শিলিগুড়ি সহ সমতলভাগের সঙ্গে সিকিমের সরাসরি সড়ক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এই মহাসড়ক। সেটি বন্ধ হওয়ায় সমতল থেকে সিকিম কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে. গিয়েছে। পুজোর মুখে এনিয়ে উদ্বিগ্ন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। 

    ভারী বৃষ্টির জেরে শৈলশহর দার্জিলিংয়েরও একাধিক জায়গায় নেমেছে ধস। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে ৬৭, কার্শিয়াংয়ে ৪০.৪০ এবং মিরিকে ৪৯.১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতেই দার্জিলিং-পুলবাজার ব্লকের পাঁচটি, জোড়বাংলো-সুখিয়াপোখরি ব্লকে ন’টি, দার্জিলিং শহরের ৫, ৬, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ২৩ এই সাতটি ওয়ার্ডে ধস নেমেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচটি বাড়ি। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ধস সরিয়ে অধিকাংশ রাস্তা স্বাভাবিক করে তোলা হয়েছে। তবে, কার্শিয়াংয়ের তিনধারিয়ায় ধস বিধ্বস্ত টয় ট্রেনের লাইন এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তাই এদিনও শিলিগুড়ি-দার্জিলিং রুটে চলাচল করেনি টয় ট্রেন।

    এদিকে, পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে ফের ফুলেফেঁপে উঠেছে তিস্তা। এদিন সকালে তিস্তা বাজারে কালিম্পং-দার্জিলিংয়ের মধ্যে সংযোগকারী ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে যায় তিস্তার জল। দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। সেচদপ্তর জানিয়েছে, তিস্তার দোমোহনিতে অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ এবং মেখলিগঞ্জে অসংরক্ষিত এলাকায় লাল এবং ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। মেখলিগঞ্জের চন্দনি গ্রামে তিস্তার পাড়, নাগরাকাটায় ডায়না নদীর বাঁধ, কোচবিহার শহর এবং কোচবিহার-১ ও ২ ব্লকে তোর্সার বাঁধের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্রান্তিতে এখনও বৈদ্যডাঙি নদীর জলে বন্দি মাস্টারপাড়া, কেরানিপাড়া ও বাসুসুব্বা গ্রাম।   জলমগ্ন তিস্তাবাজার।      - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)