• ২৭৬টির মধ্যে এপর্যন্ত বোনাস ১৭০টি বাগানে, চা বাগানে বোনাস হতেই তৃণমূলের নাম ভাঙিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ
    বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: রাজ্যের অ্যাডভাইসরি মেনে মঙ্গলবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে ১৭০টি চা বাগানে শ্রমিকদের ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হয়েছে। মহালয়া অর্থাৎ দেবীপক্ষ শুরুর আগেই হাতেগোনা কয়েকটি বাগান ছাড়া সর্বত্রই বোনাস পর্ব মিটে যাবে বলে চা শিল্পমহল সূত্রে খবর। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বড় চা বাগান অর্থাৎ শেড গার্ডেনে ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার কাজ সেরে ফেলতে হবে বলে রাজ্যের তরফে অ্যাডভাইসরি জারি করা হয়। রাজ্যের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স মিলিয়ে ২৭৬টি চা বাগানের ১৫২টিতে ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হয়েছে। গতবার ডুয়ার্সে ১৬ শতাংশ বোনাস পেয়েছিলেন চা শ্রমিকরা। সেখানে এবার ২০ শতাংশ বোনাস মেলায় তাঁরা খুশি। চাঙ্গা গ্রামীণ হাটগুলিও। এদিকে, বাগানে বোনাস হতেই তৃণমূল কংগ্রেসের নাম ভাঙিয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। 

    যদিও তৃণমূলের চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনারের দাবি, রসিদ দিয়ে চা শ্রমিকদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে বোনাস-চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। এটা নতুন নয়। সব শ্রমিক সংগঠনই করে থাকে। তবে কেউ যদি বিনা রসিদে আমাদের সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে চা শ্রমিকদের কাছে বাড়তি টাকা দাবি করে থাকেন, অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা হবে। তাঁর দাবি, প্রায় ৭০ শতাংশ বাগানে ২০ শতাংশ হারে বোনাস হয়ে গিয়েছে। যেসমস্ত বাগানে বাকি রয়েছে, তারা যাতে দ্রুত বোনাস দিয়ে দেয়, সেইমর্মে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। 

    বিজেপির ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি যুগল ঝা বলেন, অনেক বাগান কর্তৃপক্ষ এখনও বোনাস নিয়ে টালবাহানা করছে। এনিয়ে এদিন থেকে বাগানে গেট মিটিং শুরু হয়েছে। ১৮ তারিখ শ্রমদপ্তর ঘেরাও করা হবে।

    চা বাগান মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সচিব রামঅবতার শর্মা বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে এবার ২৭৬টি শেড গার্ডেন অর্থাৎ বড় চা বাগানকে বোনাসের আওতায় ধরা হয়েছে। এরমধ্যে সোমবার পর্যন্ত ১৫২টি বাগানে ২০ শতাংশ হারে বোনাস হয়েছে। রোজই কিছু বাগানে বোনাস হচ্ছে। কয়েকটি বাগান আবার কিস্তিতে বোনাস দেবে বলে শুনতে পাচ্ছি। 

    জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া চারটির মধ্যে তিনটি চা বাগানে ২০ শতাংশ হারে বোনাস হয়েছে। করলাভ্যালি বাগানের পাশাপাশি ডেঙ্গুয়াঝাড় ও ভান্ডিগুড়ি চা বাগানে বোনাস হওয়ায় খুশি শ্রমিকরা। জয়পুর চা বাগানে এখনও বোনাস হয়নি। ১৫০০ শ্রমিক রয়েছে ওই বাগানে। শ্রমিকদের দাবি, মালিকপক্ষ ২২ তারিখের মধ্যে বোনাস দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরের অদূরে রায়পুর চা বাগানটি অবশ্য গত আট বছর ধরে বন্ধ। ফলে মন খারাপ ওই বাগানের শ্রমিকদের। বাগানের পাতা বিক্রি করে দিন চলে তাদের। রাজ্য সরকার অবশ্য সমস্ত সরকারি সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে ওই বাগানে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)