• সপ্তমীতে বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার রীতি পালন নিয়ে চিন্তায় তিলাসন জমিদার বাড়ি
    বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • মৃত্যুঞ্জয় কর্মকার, হবিবপুর: ২২৪ বছরের পরম্পরা। সপ্তমীতে পাঁচ রাউন্ড গুলি ফায়ার করতে করতে  পুনর্ভবা নদী থেকে মা দুর্গার ঘট নিয়ে আসা হয় তিলাসন জমিদার বাড়িতে। হবিবপুরের ধুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলাসন এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে পুনর্ভবা নদী। লাইসেন্স থাকা বন্দুক নিয়ে যেতে আগে কখনও সমস্যা না হলেও সীমান্তরক্ষী বাহিনী গত বছর আপত্তি জানিয়েছিল। ফলে নদী থেকে জল নিয়ে অনেকটা এগিয়ে এসে পরম্পরা বজায় রাখতে বাধ্য হন উদ্যোক্তারা। কতদিন এই ঐতিহ্য ধরে রাখা যাবে, সে বিষয় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জমিদার পরিবারের বর্তমান সদস্যরা।

    পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা অবোধ নারায়ণ রায় ডালের ব্যবসার সূত্রে তৎকালীন অখণ্ড ভারত তথা বর্তমানের মালদহের তিলাসনে আসেন। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের কাছে নিলামে প্রায় ৫২ টি মৌজার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় গ্রামে কোথাও দুর্গাপুজো হতো না। খরচের বিষয়টিও অন্যতম বাধা ছিল গ্রামবাসীদের কাছে। ১৮০০ সালে অবোধবাবুর ছেলে শিবপ্রসাদ রায় নিজের বাড়িতে প্রথম দুর্গাপুজো চালু করেছিলেন। শুরুতেই নবরাত্রি থেকে দেবীর পুজো শুরু হয় জমিদার বাড়িতে। পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন এলাকা সহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। সেই থেকেই বছরের পর বছর বংশ পরম্পরায় রীতিনীতি মেনে আজও হয়ে আসছে রায়বাড়ির দুর্গাপুজো। দেশভাগের পর বাংলাদেশ থেকেও বহু ভক্ত এই পুজোয় অংশগ্রহণ করতেন। জমিদারবাবু সপ্তমীর দিন পুনর্ভবা নদী থেকে দেবীর বোধনের ঘট ভরে বাড়ি নিয়ে আসা পর্যন্ত বন্দুকের গুলি ফায়ার করতে করতে আসতেন। 

    শিবপ্রসাদবাবুর বংশধর রাকেশ কুমার রায় বলেন, গত বছর সীমান্তরক্ষী বাহিনী আপত্তি জানানোয় নদী থেকে অনেকটা এগিয়ে কাঁটাতারের এপারে দাঁড়িয়ে বন্দুক ফায়ারের রীতি পালন করা হয়েছিল। তবে, আর পরম্পরা পালন করা যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।আমাদের পুজোয় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। আজও পুজোর চারদিন জমিদার বাড়িতে সকলের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা থাকে।  জমিদার বাড়িতে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)