গ্রামে বাড়ি, শহরে বাস নজরে তৃণমূল নেতারা, মেঠো রাস্তায় নামুন, নিদান সহযোগী সংস্থার
বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: গ্রামের নেতা, অথচ রাত্রিযাপন করেন শহরের বিলাসবহুল বাড়িতে। তাঁদের কেউ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি, কেউ পঞ্চায়েত সভাপতি, আবার কেউ অন্য পদে রয়েছেন। আয়ের উৎস তেমন না থাকলেও তাঁদের অনেকেই শহরে বাড়ি তৈরি করেছেন। আবার কেউ বর্ধমানে জমি কিনে রেখেছেন। আপাতত ভাড়াবাড়িতে থাকছেন। পরে বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তৃণমূলের এই নেতারা এখন সহযোগী সংস্থার নজরে রয়েছেন। কোন নেতা কোথায় কী সম্পত্তি করেছেন, সেই হিসেব তারা আগেই লিপিবদ্ধ করেছে। এবার গ্রামের সংগঠনে থাকা শহুরে নেতাদের তারা চিহ্নিত করছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বর, রায়না, ভাতার, মেমারির মতো বিভিন্ন ব্লকের নেতারা শহরে থাকতে অভ্যস্ত। তাঁদের কেউ কেউ অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট বা বাংলো কিনে রেখেছেন। দলের এক নেতা বলেন, এলাকার সংগঠনের কাজ জোরালোভাবে করার জন্য ব্লক সভাপতি বা অন্যান্য পদাধিকারীদের গ্রামে থাকা দরকার। সারাদিন মাঠে কাজের পর সন্ধ্যার দিকে গ্রামের বাসিন্দারা অবসর সময় কাটান। সেই সময় গ্রামের মাচায় জনসংযোগের কাজ ভালোভাবে করা যায়। তা না করে অনেকেই সূর্য ডোবার আগেই বর্ধমানে চলে আসছেন। কেউ কেউ তিন-চারদিন থাকার পর গ্রামে যান। আবার কেউ কেউ প্রতিদিনই যাতায়াত করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সহযোগী সংস্থা বিগত কয়েক মাসে গ্রামে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছে। সেইমতো তারা রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সাংগঠনিক রদবদল হতে চলেছে। যুব, শ্রমিক সংগঠনেও রদবদল হতে চলেছে। নতুন তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। ঘোষণা হওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র। চলতি মাসের শেষের দিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব বৈঠক ডেকেছে। আগামী দিনে কীভাবে পথ চলতে হবে, তা ওই বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তৃণমূলের জেলাস্তরের এক নেতা বলেন, প্রতিটি নেতার পদক্ষেপ এখন সহযোগী সংস্থার নজরে রয়েছে। জনপ্রতিনিধিদেরও তারা স্ক্যানারে রেখেছে। কোন জনপ্রতিনিধি কেমন কাজ করছেন, সেই হিসেবও তাদের কাছে রয়েছে। পরে সেই রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনে ঝাঁকুনি দিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সি প্রতিটি জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। পূর্ব বর্ধমানের সংগঠনের পদাধিকারী এবং বিধায়কদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। বিধানসভা নির্বাচনে টার্গেটও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকেই অনেকে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার নিজেদের মতো করে লবি তৈরি করছেন। বিধানসভা নির্বাচনে কে টিকিট পাবে, সেই সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্ব নেবে। দক্ষতা, যোগ্যতা এবং ভাবমূর্তি দেখে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। সেটা নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে।