• বাংলাদেশি! স্বামী বারুইপুর, স্ত্রী দমদমের ভোটার
    বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: পাবনার বাসিন্দা তথা সেখানকার বালিয়াহালট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সুখরঞ্জন চক্রবর্তী স্ত্রী আর বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কাঁটাতারের বেড়া টপকে এপারে! করিৎকর্মা পরিবার! এপারে এসেই সুখরঞ্জন বারুইপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার (পার্ট নম্বর ১৩৯, সিরিয়াল নম্বর ৫১৮)। স্ত্রী দীপালি দমদম কেন্দ্রে (পার্ট নম্বর ১০২, সিরিয়াল নম্বর ১২৫৮) লোকসভা নির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন। বড় ছেলে দীপাঞ্জনের নাম উঠেছে গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত দমদমের খসড়া ভোটার তালিকায়। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি বাংলাদেশি পরিবারের কর্তা সুখরঞ্জন। তৈরি করান আধার কার্ড। এরপর বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ ভারতীয়’! 

    বছর তিনেক আগে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৬৩, সূর্য সেন পল্লিতে ফ্ল্যাট কিনে সেখানে সংসার পাতে চক্রবর্তীরা। ওই বছরই দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টাও চালান সুখরঞ্জন। তবে হেয়ারিংয়ে হাজির না হওয়ায় সে প্রচেষ্টা বাতিল হয়। বাংলাদেশে পালাবদলের পর ইউনুস সরকারের কড়াকড়িতে বিপাকে পড়েন সুখরঞ্জন। ফের বাংলাদেশে ফিরে পাবনার ওই প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে কাজে যোগ দেন। সঙ্গে রয়েছে মূক ও বধির ছোট ছেলে। যে সন্তানের জন্য ওপারের সরকারের থেকে ভাতাও মেলে। এই আবর্তেই দমদমের ভোটার তালিকায় নাম তোলার চেষ্টা ব্যর্থ হলে বারুইপুর পশ্চিম কেন্দ্রের নির্বাচকমণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া, নাকি বারুইপুর থেকে সরিয়ে দমদমের ভোটার তালিকায় নাম তোলার চেষ্টা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই আবর্তেই বাংলাদেশি এই পরিবারের কীর্তিকলাপ নিয়ে সরব হয়েছে ওপারের সংবাদমাধ্যমগুলি। শ্যালক সুমন কুমার রায় জামাইবাবু সুখরঞ্জনের এপারের আধার ও ভোটার কার্ড এবং বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রত্যায়িত নকল সহ বাংলাদেশ শিক্ষা দপ্তর ও পাবনা সদর উপজেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগের বিষয়বস্তু—কীভাবে একজন ভারতীয় নাগরিক পাবনার স্কুলের প্রধান শিক্ষক। হইচই শুরু হয়েছে ওপারে। এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দীপালিদেবী বলেন, কয়েক দশক আগে এদেশে এসেছি। আমি ভারতের নাগরিক। স্বামীর সঙ্গে বহু বছর কোনও সম্পর্ক নেই। আর স্বামী সুখরঞ্জন ওপারের সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন—ঝামেলা পাকিয়ে বড় ছেলেকে নিয়ে দীপালি ভারতে চলে গিয়েছে। আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।         
  • Link to this news (বর্তমান)