জন্ম খুলনাতে, ৩৩ বছর পর শংসাপত্র দত্তপুকুরে! নথি ‘জাল’, তদন্তে নিশ্চিত কেরল পুলিশ
বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: জন্ম ১৯৮৮ সালে। কিন্তু যুবকের ‘বার্থ সার্টিফিকেট’ নিবন্ধীকরণ হয়েছে ২০২১ সালে দত্তপুকুরের ছোট জাগুলিয়া পঞ্চায়েত থেকে। এমনই অবাক করা শংসাপত্র হাতে নিয়ে দত্তপুকুরে তদন্তে এসে হাসিমুখে ফিরেছে কেরল পুলিশ। এদেশে বেআইনি অনুপ্রবেশের দায়ে ধৃত ওই যুবকের কাছে থাকা জন্মের শংসাপত্র ধরে উত্তর ২৪ পরগনা দত্তপুকুরে তার ঠিকুজিকুষ্ঠি জানতে এসেছিল কেরল পুলিশ। বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরও ছোট জাগুলিয়া পঞ্চায়েতের মণ্ডলগাঁতি এলাকার বাসিন্দার শংসাপত্র বহনকারী ওই ‘কীর্তিমান’ মানিক বিশ্বাসের বাড়ির হদিশ পায়নি কেরল পুলিশ। পাবেই বা কী করে! এই ‘মানিক’ যে আসলে বাংলাদেশের খুলনার মোড়েলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। বেআইনিভাবে ভারতে ঢুকে পৌঁছে গিয়েছিল কেরল। কাজ জুটিয়ে নিয়েছিল ত্রিশূরে। মানিক যে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি, শুধুমাত্র তা যাচাই করতেই দক্ষিণ ভারতের প্রান্তিক রাজ্যের পুলিশ এসেছিল বাংলায়।
তবে, ভারতীয় সাজার জন্য মানিক কীভাবে জন্ম শংসাপত্র তৈরি করল, কারা তাতে সাহায্য করল, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, কেরল রাজ্যের ত্রিশূরের আথিক্কাদ থানার পুলিশ চলতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন মানিক বিশ্বাস। তার বাবার নাম মধু বিশ্বাস। বছর ৩৭’এর ওই যুবক নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করে। কিন্তু, তার গতিবিধি-কথাবার্তা শুনে সন্দেহ হয় পুলিশের। তার কাছে থাকা জন্ম শংসাপত্রটি বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। অনুপ্রবেশকারী মানিক এখন কেরলের সংশোধনাগারে। খোঁজখবর নিয়ে কেরল পুলিশ জানতে পারে মানিক আসলে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি।
মানিকের তথাকথিত জন্ম শংসাপত্রে জ্বলজ্বল করছে তৎকালীন প্রধান নুরুল হকের স্বাক্ষর। নুরুল সাহেব এখন ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। তাঁর কথায়, ওই শংসাপত্র পঞ্চায়েত থেকে ইস্যু করা হয়নি, ওটা ভুয়ো। কীভাবে পেয়েছে জানি না। কেরল পুলিশ ওই শংসাপত্রের তদন্তেই এসেছিল। পঞ্চায়েতের প্রধান অমল দাস বলেন, কেরল পুলিশ এসে পঞ্চায়েতে মানিক বিশ্বাস নামে কোনও বাসিন্দা থাকতেন কি না, জানতে চায়। ওই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। বারাসত জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে জন্ম শংসাপত্র সংক্রান্ত একটা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।