‘অস্ত্রত্যাগে রাজি’, ৯ মাসে ২১০ সদস্য খুইয়ে সরকারের কাছে ‘শান্তি প্রস্তাব’ মাওবাদীদের
প্রতিদিন | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাগাতার মারে দেওয়ালের পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর অবশেষে মাথা নোয়াল মাওবাদীরা! গত ৯ মাসে ২১০ জন সদস্যের মৃত্যুর পর সরকারের কাছে শান্তির দাবি জানাল মাওবাদীরা। মাও-কেন্দ্রীয় কমিটির জানিয়েছে, তারা আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগ করতে রাজি। সিপিআই (মাওবাদী)’র তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, মাওবাদীরা বর্তমানে অস্থায়ী সংঘর্ষবিরতি চায়, যাতে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষ সমাধানের পথে আসতে পারে। যদিও সেই আলোচনার পথে সরকার যেন কোনওরকম চালাকি না করে সে বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
মাওবাদীদের তরফে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সাল থেকে লাগাতার চলা অভিযানে দুইপক্ষই সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী এক মাস সরকারের সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়া চলুক। কেন্দ্রীয় মাওবাদী নেতাদের এই আলোচনায় সামিল করা হোক। মাওবাদী নেতা অভয়ের এই বিবৃতি গত ১৫ আগস্টের বলে জানা গিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, এই সংঘর্ষ যাতে থামে সেটা আমরাও চাই। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত বদল করেছি। তবে এই বিষয়ে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো উচিত। যদি সরকার সত্যিই আলোচনা চায় তাহলে আমাদের এক মাসের সময় দেওয়া হোক। এই সময়ে জেলবন্দি শীর্ষ মাওবাদী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় তারা। তবে এই এক মাস যাতে কোনও অভিযান না চলে সেটাও জানানো হয়েছে মাওবাদীদের তরফে। মাও সংগঠনের বার্তা, ‘এই সময়কালে তাদের উপর যেন পুলিশ কোনওরকম অভিযান না চালায়। সরকার যদি চায় তবে কাল থেকেই ভিডিও কলের মাধ্যমে আলোচনা চালাতে প্রস্তুত আমরা।’
২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদমুক্ত ভারত গড়ার বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছত্তিশগড়ে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাওবিরোধী অভিযান আরও গতি পেয়েছে। ২০২৪ সালে বস্তার অঞ্চলে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে মৃত্যু হয়েছে ২৮৭ জন মাওবাদীর। গ্রেপ্তার হয়েছে হাজারেরও বেশি, পাশাপাশি আত্মসমর্পণ করেন ৮৩৭ জন। ২৪-এর পর ২০২৫ সালে অভিযানের ঝাঁজ আরও বেড়েছে। রিপোর্ট বলছে, গত ৯ মাসে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে ২১০ জন মাওবাদীর। এদের মধ্যে শুধুমাত্র ছত্তিশগড়ে ১৩ জন শীর্ষ মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়েছে। যাদের মাথার ন্যূনতম ২০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অর্থ ক্রমশ মৃত্যুর পথে পা বাড়ানো। তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েই শান্তি চাইছে মাওবাদীরা। তবে সরকার মাওবাদীদের সে দাবি মানবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।