• গর্ভপাতের পরেও 'ওটা' চাই, নয়তো চাকরি খেয়ে নেব! মহিলা কর্মীর প্রতি ক্রীতদাসী সুলভ আচরণে রাগে ফুঁসছে নেটপাড়া
    আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্মক্ষেত্রের বিষাক্ত পরিবেশ এবং অমানবিক ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু সম্প্রতি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রেডিটে এক মহিলা নিজের নারকীয় অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার পর তা নিয়ে নতুন করে শোরগোল পড়েছে নেটপাড়ায়। বছর চল্লিশের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে লাগাতার হয়রানি, গর্ভপাতের মতো চরম ব্যক্তিগত সময়ে হাসপাতালের নথি চাওয়া এবং এমনকী চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুমকির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন ওই মহিলা।

    বছর ত্রিশের ওই মহিলা নিজের পোস্টে লেখেন, "কয়েক বছর আগে আমার একবার গর্ভপাত হয়। এর প্রায় ৬-৭ মাস পর আমি আবার অন্তঃসত্ত্বা হই। কিন্তু আগের বারের অভিজ্ঞতার কারণে আমি আমার ম্যানেজারকে (৪০) বিষয়টি জানাইনি। কারণ, তিনি অতীতে আমায় বলেছিলেন, 'বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করো না, তুমি খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী'। এমনকী অন্যদের সঙ্গে আমার আড়ালে বলতেন, আমি নাকি বাচ্চা নেওয়ার জন্য পাগল।"

    এরপরই নিজের জীবনের অন্ধকারতম পর্বের কথা তুলে ধরেন তিনি। লেখেন, "সেই সময়েই অফিসে কোভিডের ঢেউ আসে এবং আমারও সংক্রমণ হয়। ম্যানেজারকে কোভিড পজিটিভ হওয়ার কথা জানিয়ে আমি বাড়িতেই ছিলাম। ঠিক সেই সময়েই আমি জানতে পারি, আমার আবার গর্ভপাত হয়েছে। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে আমি তীব্র জ্বর, গর্ভপাতের যন্ত্রণা এবং কোভিডের জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম।"মহিলার অভিযোগ, "আমার জীবনের সেই অন্ধকারতম সময়ে কোনও সহানুভূতি দেখানোর বদলে আমার ম্যানেজার আমাকে সপ্তাহখানেক ধরে চরম হেনস্থা করতে থাকেন। তিনি আমার হাসপাতালের ডিসচার্জ সামারি দেখানোর জন্য ক্রমাগত চাপ দিচ্ছিলেন। এমনকী হুমকি দিয়ে জানান, এইচআর-এর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব থাকায় তিনি নাকি সবটা জেনেই ছাড়বেন।" মহিলার আরও অভিযোগ, তিনি বিষয়টি সংস্থার এক মহিলা সিওও-কে জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি। তিনিও কোনও সাহায্য করেননি।

    পোস্টের শেষে ওই মহিলা লেখেন, "আমি আশা করি, এই ধরনের বিষয় নিয়ে সংস্থাগুলি আরও মানবিক এবং শ্রদ্ধাশীল হবে এবং এই ধরনের ম্যানেজারদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে।"

    মহিলার এই পোস্টের পর বহু মানুষ তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসেন। অনেকেই কর্মক্ষেত্রে ম্যানেজারদের এই ধরনের ‘দাসমালিক’ সুলভ আচরণের নিন্দা করেন। এক ব্যক্তি পরামর্শ দেন, "কেউ যদি না শোনে, তাহলে চুপচাপ চাকরিটা ছেড়ে দিন, ওই জায়গাটা আপনার যোগ্য নয়। এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে হয়তো আপনাকেই আরও ভুগতে হবে। আপনার জীবন এবং সন্তানের চেয়ে চাকরি বড় নয়।" উত্তরে ওই মহিলা জানান, "আমি তাই করেছি। আমি এখন ১৮ মাসের এক ফুটফুটে সন্তানের মা। আপনার শুভেচ্ছার জন্য ধন্যবাদ।"আরেকজন লেখেন, "অধিকাংশ ভারতীয় ম্যানেজারের সহানুভূতির অভাব রয়েছে, তাঁরা কর্মীদের বিশ্বাস করেন না এবং কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে কোনও ভারসাম্য রাখেন না।" অন্য এক ব্যবহারকারীর মন্তব্য, "আমরা ভাবি মহিলারা মহিলাদের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু দিনের শেষে টাকাপয়সা আর ক্ষমতাই সব। সিনেমায় বা নাটকেই এমনটা হয়, বাস্তবে নয়।"
  • Link to this news (আজকাল)