এক বছরের ভাগ্নের রক্ত হাতে উল্লাস মামাদের, বোনের উপরেও আক্রমণ! হাড়হিম কাণ্ড যোগীরাজ্যে
আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিজের বোনকে বেধড়ক মারধর। মারতে মারতে বোনের এক বছরের সন্তানকে খুন করল দুই যুবক। দুই ভাইয়ের আক্রমণে ও হেনস্থায় গুরুতর আহত ৩০ বছরের এক যুবতী।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে। আহত যুবতীর নাম, ছোটি। তাঁর এক বছরের সন্তানকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ আধিকারিক সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, সোমবার রাতে ওই যুবতীর দুই ভাই আচমকাই বাড়িতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঢুকে হামলা চালায়। এরপর বোন ও শিশু ভাগ্নের উপর হামলা করে। যুবতী গুরুতর আহত হন। অন্যদিকে ঘটনাস্থলেই এক বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের অনুমান, সম্ভবত পারিবারিক ঝামেলার কারণেই এই হামলা ঘটেছে। বোনের উপর ক্ষোভের জেরেই হামলা চালায় দুই ভাই। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, যুবতী সন্তানকে নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। চুরির অভিযোগে বর্তমানে যুবতীর স্বামী জেল হেফাজতে রয়েছে। যুবতী একাই থাকেন ওই বাড়িতে। তদন্ত শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, পারিবারিক ঝামেলার কারণে ভাগ্নেকে খুন করার ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। সংসারে নিত্যদিন ঝামেলা, অশান্তি। যার জেরে সংসার ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী। স্ত্রীর রাগ ভাঙানোর পরিবর্তে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাল এক ব্যক্তি। নিজের ভাগ্নেকেই খুন করলেন তিনি। কারণ? ভাগ্নের শরীর থেকে রক্ত ও লিভারটির প্রয়োজন ছিল তাঁর। কারণ, এক তান্ত্রিক নির্দেশ দিয়েছিলেন, স্ত্রীকে ফেরাতে বিশেষ যজ্ঞ করার প্রয়োজন। সেই যজ্ঞের জন্য প্রয়োজন রক্ত ও লিভার। সেগুলি জোগাড় করতে শেষমেশ নিজের ভাগ্নেকেই খুন করলেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের আলওয়ার জেলায়। বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, নাবালক খুনে মূল অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন তান্ত্রিক। দীর্ঘদিন ধরেই স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা চলছিল এক যুবকের। যার জেরেই সংসার ছেড়ে চলে যান স্ত্রী। স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে, সংসারে অশান্তি কমাতেই ওই তান্ত্রিকের নির্দেশে যজ্ঞের আয়োজন করেন যুবক। সেই যজ্ঞের জন্য প্রয়োজন ছিল লিভার। নিজের ভাগ্নেকে খুন করে, দেহ থেকে লিভার বের করে, যজ্ঞের কাজটি সারার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ১৯ জুলাই থেকে ছয় বছরের নাবালক নিখোঁজ ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে আলওয়ার জেলার সরাই কালান গ্রামে। সেদিনেই নাবালকের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। ১৯ জুলাই রাতে বাড়ির অদূরে একটি নির্জন এলাকা থেকে নাবালকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে তারা। তার শরীরে একাধিক জায়গায় ইঞ্জেকশন ফোঁটানোর দাগ দেখতে পায় পুলিশ। তখনই সন্দেহ হয় পুলিশ।
জানা গেছে, তন্ত্র সাধনার জন্য ওই নাবালকের দেহ দেখে রক্ত নিয়েছিলেন ওই তান্ত্রিক। কালো জাদুর জন্যেই নিজের ভাগ্নেকে খুন করেন মনোজ কুমার। পুলিশ প্রথমেই মনোজকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। দীর্ঘ জেরায় মনোজ খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেন। তিনি জানান, ওই এলাকাতেই থাকেন সুনীল কুমার নামের এক তান্ত্রিক। তাঁর আদেশেই নিজের ভাগ্নেকে খুন করেন তিনি।
তান্ত্রিক সুনীল কুমার জানিয়েছিলেন, যজ্ঞের জন্য কমবয়সি কারো লিভার ও রক্তের প্রয়োজন। ঠিকমতো যজ্ঞ করলে, তবেই ফিরে পাওয়া যাবে স্ত্রীকে। এদিকে স্ত্রীকে ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন মনোজ। তান্ত্রিকের নির্দেশে নিজের ভাগ্নেকেই খুন করেন। এর পাশাপাশি আরও ১২ হাজার টাকা চেয়েছিলেন তান্ত্রিক সুনীল কুমার।
মনোজ আরও জানিয়েছেন, স্ত্রীকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি বাড়িতে ফেরেননি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তান্ত্রিকের নির্দেশে ১৯ জুলাই ভাগ্নেকে তিনি বাড়ি থেকে নিয়ে বের হন। সেদিন লজেন্স কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়েছিলেন ভাগ্নেকে। এরপর নির্জন একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে প্রথমে খুন করেন। তারপর দেহটি ফেলে রেখেছিলেন একটি ঘরের মধ্যে। সেখান থেকেই সুযোগ বুঝে ভাগ্নের লিভারটি বের করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।
এদিকে পুলিশের কাছে নাবালকের নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার। তল্লাশি অভিযান চালিয়ে সেই ঘর থেকেই দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। তখনই ইঞ্জেকশনের দাগগুলি চোখে পড়ে তাদের। ২২ জুলাই, মঙ্গলবার তান্ত্রিক সুনীলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সিরিঞ্জ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘরটি ইতিমধ্যেই সিল করে দিয়েছে ফরেন্সিক দল। ঘটনার মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।