নতুন ভারত পরমাণু হুমকিতে ভীত নয়, জন্মদিনেই ফের একবার পাকিস্তানকে নিশানা প্রধানমন্ত্রীর ...
আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ৭৫ তম জন্মদিনে মধ্যপ্রদেশের ধার জেলায় এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন। সেখান থেকে ফের একবার তিনি পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন। প্রথমবারের মতো জইশ-ই-মহম্মদ ভারতের অপারেশন সিঁদুর তাদের ব্যাপক ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে। মোদি এদিন বলেন, জইশের শীর্ষ কমান্ডারের এই স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে যে নতুন ভারত কেবল দৃঢ়ভাবে সন্ত্রাসের জবাবই দেয় না, বরং কারও পারমাণবিক হুমকিকেও ভয় পায় না।
মোদির বক্তব্যে ছিল তীব্র আবেগ ও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি। তিনি বলেন, “পাকিস্তানি জঙ্গিরা আমাদের বোনেদের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল। আমরা চালিয়েছিলাম অপারেশন সিঁদুর, আর সন্ত্রাসের শিবিরগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। আমাদের সাহসী সেনারা চোখের পলকে পাকিস্তানকে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেছিল। মঙ্গলবারই গোটা বিশ্ব দেখেছে আরেক পাকিস্তানি জঙ্গি কেঁদে কেঁদে নিজের কাহিনি বলছে। এটাই নতুন ভারত। যে পারমাণবিক হুমকিকে ভয় পায় না, বরং সন্ত্রাসীদের ঘরে ঢুকে আঘাত করে।”
এই বক্তব্য যেখানে জানানো হয় যে জইশ কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরি এক ভিডিওতে স্বীকার করেছেন ৭ মে বাহাওয়ালপুরে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের সদর দফতরে ভারতের বিমান হামলায় আজহারের পরিবারের সদস্যরা নিহত হয়েছে। এই হামলা চালানো হয়েছিল ২২ এপ্রিল পাহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের প্রতিশোধে, যেখানে ২৫ জন পর্যটক প্রাণ হারান। বাহাওয়ালপুর ছাড়াও পাকিস্তানের আরও আটটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যায়।
কাশ্মীরি ভিডিওতে স্বীকার করেন, বাহাওয়ালপুর হামলায় আজহারের পরিবারকে “টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়েছে”। শুধু তাই নয়, তিনি জইশের দিল্লি ও মুম্বই হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্যে আরও উঠে আসে পাকিস্তানের বালাকোট অঞ্চলের গুরুত্ব। তিনি বলেন, “তিহার জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর আমির-উল-মুজাহিদিন মওলানা মাসুদ আজহার পাকিস্তানে ফিরে আসেন। তাঁর চিন্তা ও কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বালাকোটের মাটি তাঁকে আশ্রয় দেয়। এখানকার প্রতিটি কণা তাঁর কাছে ঋণী। সেই আজহারই দিল্লি ও মুম্বইকে কাঁপিয়েছিল।”তার আরও দাবি ছিল বাহাওয়ালপুরে নিহত জইশ জঙ্গিদের সৎকারে যোগ দেওয়ার নির্দেশ সরাসরি পাকিস্তানের সেনা সদর দফতর থেকে দেওয়া হয়েছিল। সেনাপ্রধানের নির্দেশে সেখানে জেনারেলরাও পাঠানো হয়। তবে পরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করে, যাতে বাহাওয়ালপুর ও জইশের যোগসূত্র প্রকাশ্যে না আসে।
তাঁর স্বীকারোক্তিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসে—অপারেশন সিঁদুরের পর পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই হামলা তাদের নেটওয়ার্ককে কাঁপিয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তব্যে পরিষ্কার যে ভারত আর আগের মতো নয়। এটি এক নতুন ভারত, যে সন্ত্রাসীদের ঘরে ঢুকেও জবাব দিতে জানে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম।