উৎসবের আবহে খাদ্যরসিকদের জন্য সুখবর, বিশ্বকর্মা পুজোয় বাংলার বাজারে ঢুকল পদ্মার ইলিশ, দেদার বিকোচ্ছে! ...
আজকাল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজোর আগেই বাঙালিদের পাতে পড়তে চলেছে পদ্মার ইলিশ। বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করল ইলিশ বোঝাই ট্রাক। উৎসবের আবহে দেদার ইলিশে ছেয়ে যাবে বাজার।
দুর্গা পুজো উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ৩৭টি সংস্থাকে। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত রপ্তানির বরাত দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্য রাতে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে এসে পৌঁছয় তিন ট্রাক ইলিশ মাছ। প্রতিটি ট্রাকে ৪ টন করে ইলিশ মাছ আছে। একটি ট্রাকে এক কিলো থেকে দেড় কিলো ওজনের পদ্মার ইলিশ মাছ এসেছে।
আজ বুধবার বা আগামিকাল বৃহস্পতিবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে কাস্টম ক্লিয়ারিং ও ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট । বাজার অনুযায়ী দাম নির্ভর করবে।
রাজ্যের ফিস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘বুধবারই হাওড়ায় পদ্মার ইলিশ ঢুকছে। ১৬০০ টাকা থেকে মাছের দাম শুরু হতে পারে। তবে মাছের পরিমাণ অনেকটা হলেও সময়টা বড্ড কম’। উল্লেখ্য, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। পাশাপাশি, সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়েছে যে, যেকোনও সময় এই অনুমতি বাতিলের ক্ষমতা সরকারের রয়েছে। একাধিক নিয়মনীতি সামলে ৫ অক্টোবরের মধ্যে কত টন ইলিশ ভারতে আসবে এবং তা মজুত করার ব্যবস্থা হবে তা নিয়েই কপালে চিন্তার ভাঁজ পরেছে বিক্রেতাদের। উল্লেখ্য, সঈদ আরও জানান, গতবার ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত ৫৭৭ মেট্রিক টন ইলিশ বাংলাদেশ থেকে এরাজ্যে এসেছিল। কারণ সময়টা খুব কম পাওয়া গিয়েছিল।
সম্পাদকের কথায়, ‘এবার সময়টা যেহেতু বেশি পাওয়া গিয়েছে সেজন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে যতটা সম্ভব ইলিশ মাছ এদেশে নিয়ে আসার।’ স্থল বন্দর দিয়েই মূলত মাছ বাংলাদেশ থেকে এদেশে নিয়ে আসা হয়। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ট্রাকে করে আসা ইলিশ নিয়ে আসা হয় হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন পাইকারি মাছ বাজারে। সেই ইলিশ গোটা রাজ্যে নিয়ে যান খুচরো বিক্রেতারা। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর পুজো উপলক্ষে বাংলাদেশের ইলিশ এদেশে আসা নিয়ে একটা দোলাচল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার শেষপর্যন্ত ইলিশ মাছ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
কিন্তু ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ এদেশে পাঠানোর কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত তার অনেক কম পরিমাণ ইলিশ এদেশে আসে। বাজারে যদিও এইমুহুর্তে ছেয়ে গিয়েছে গুজরাটের ইলিশে। এরাজ্যের মৎস্যজীবীরা এবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য সেভাবে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। বারবার দুর্যোগ তাঁদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষার সময়ে যেহেতু বাজারে ইলিশের চাহিদা থাকে তুঙ্গে সেজন্য এবছর ব্যবসায়ীরা মুম্বাই ও গুজরাটের ইলিশ দিয়ে সেই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করেছেন।কিন্তু তাতে বাজার ইলিশ মাছে ভরলেও ক্রেতার মন ভরেনি। কারণ স্বাদের তারতম্য। অনেকেই জানিয়েছেন, ইলিশ মাছ রান্না করার সময় যে পরিচিত গন্ধ পাওয়া যায় গুজরাটের ইলিশে সেই গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আশার কথা, আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় ফের ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। আশা করা যায়, তাঁরা ট্রলার ভর্তি করেই ফিরবেন।