জন্ম বিদেশে, ‘স্টিম সাহেবের’ দীর্ঘায়ু কামনায় পুজো বাংলায়
বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জন্ম বিদেশে। কিন্তু দীর্ঘায়ু কামনায় ‘স্টিম সাহেবের’ পুজো হল বাংলায়! দেড়শো বছরে পা রেখেছেন তিনি। অথচ শরীরে তেমন বয়সের ছাপ লাগেনি। আরও কয়েকশো বছর যাতে স্টিম সাহেব একইরকম থাকেন, পুজো দিয়ে এটাই প্রার্থনা করা হল যন্ত্রের দেবতা বিশ্বকর্মার কাছে! কিন্তু কে এই স্টিম সাহেব? এটি আসলে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের জন ফাউলার অ্যান্ড কোম্পানির তৈরি একটি স্টিম রোলার। দেখতে একেবারে রেলের স্টিম ইঞ্জিনের মতো। ইংরেজদের হাত ধরে জলপাইগুড়িতে পা রাখে সে।স্বাধীনতার পর ইংরেজরা দেশ ছেড়ে চলে গেলেও স্টিম সাহেব থেকে গিয়েছে তিস্তাপাড়ের শহরেই। একসময় জ্বালানি হিসেবে স্টিম সাহেবের পেটে বেলচা দিয়ে তুলে দেওয়া হতো কয়লা। এবড়ো-খেবড়ো পথে হুইসেল বাজিয়ে এগিয়ে যেত সে। সমান হয়ে যেত রাস্তা। বহুদিন হল তার কাজ বন্ধ। কিন্তু তাকে ঘিরে যত্নআত্তি কমেনি। ১৯৬৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় তিস্তার পলির নীচে চাপা পড়ে স্টিম সাহেব। পরে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়ি শহরে জুবিলি পার্কের পাশে পূর্তদপ্তরের অফিসে। সেখানেই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।এখনও সেখানেই রয়েছে স্টিম সাহেব। সারাবছর রোলারটির দেখভাল করেন পূর্তদপ্তরের কর্মীরা। বিশ্বকর্মা পুজোয় ফুল-মালা-চন্দনে সাজিয়ে তোলা হয় স্টিম সাহেবকে। তার দীর্ঘায়ু কামনায় ঘটা করে হয় পুজো। পূর্তদপ্তরের কর্মীদের দাবি, দেড়শো বছরেও যেন স্টিম সাহেবের গায়ে বয়সের ছাপ পড়েনি। নতুন প্রজন্ম যাতে ব্রিটিশ আমলের এই রোলারটি সম্পর্কে জানতে পারে, সেকারণে বছরভর এর যত্নআত্তির খামতি রাখেন না তাঁরা।