আকাশে মেঘের ঘনঘটা। কখনও হালকা বৃষ্টি, কখনও আবার শোনা যায় মেঘের গর্জন। পেঁজা তুলোর শরতের মেঘের দেখা মিলছেই না। কাশবনের উঁকিঝুঁকি থাকলেও পুজোর গন্ধ নৈব নৈব চ। তবু নদিয়ার কল্যাণীর আইটিআই মোড় লুমিনাস ক্লাবের মায়ানমারের সিনবিউম প্যাগোডাকে ঘিরে আবেগের শেষ নেই দর্শনার্থীদের।
কয়েক বছর ধরে আইটিআই মোড় লুমিনাস ক্লাবের দুর্গাপুজো ‘বিশ্বখ্যাতি’র মুকুট বহন করে চলেছে। খ্যাতির মিষ্টতা শুধু মফঃস্বল নয়, বিদেশেও প্রশংসনীয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও সেরার সেরা শিরোপা ছিনিয়ে নেবে বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা।
এবছর ৩৩ তম বর্ষে পদার্পণ করল কল্যাণী আইটিআই মোড় লুমিনাস ক্লাবের দুর্গাপুজো। থিম মায়ানমারের সিনবিউম প্যাগোডা। এটি বৌদ্ধ মন্দির। তার আদলে তৈরি হচ্ছে প্যান্ডেল। কাজ শেষের পথে। মণ্ডপের সামনে বিশাল জায়গায় গাছ বসিয়ে করা হয়েছে সুসজ্জিত বাগান। রয়েছে বিশাল ফোয়ারা। মণ্ডপের বাইরের অংশ সাদা ধবধবে প্লাই ও ফাইবার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ভিতরে নীল রঙের বোর্ডের ওপর ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কারুকার্য। তাতে ব্যবহার করা হয়েছে, কতবেলের খোল, পাহাড়ি ফুল,ফল। কারুকার্যে ব্যবহার হয়েছে, দইয়ের চামচ,আইসক্রিম কাঠি ও পাটকাঠি। মণ্ডপের ভিতরে শিল্প মুগ্ধ করবে দর্শনার্থীদের। এই মণ্ডপ পরিদর্শনে শুধু দেশের দর্শনার্থীরা নয়,ভিড় করেন বিদেশের দর্শনার্থীরাও।
আইটিআই মোড় লুমিনাস ক্লাবের সম্পাদক অমিত বিশ্বাস বলেন, দ্বিতীয়ার দিন বিকেল ৫ টায় দর্শনার্থীদের জন্য খোলা হবে মণ্ডপ। লুমিনাস ক্লাবের পুজোর বিশ্বখ্যাতি রয়েছে। পুজোর দিনে উপচে পড়বে ভিড়। সুষ্ঠভাবে যাতে দূরদুরান্তের দর্শনার্থীরা মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শন করতে পারে তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশ-বিদেশের সকল দর্শনার্থীদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ক্লাবের কর্ণধার অরূপ মুখার্জি বলেন, ১৭০ ফুট উচ্চতা মণ্ডপের। প্রতিবারের ন্যায় এবছরও প্রতিমা সোনার গয়না পরিহিত থাকবে। এবার আগের থেকে বেশি কেজির সোনার গয়না পড়ানো হবে প্রতিমাকে। কড়া নিরাপত্তা থাকছে। প্রতিমা সাবেকিয়ানার নয়। নতুনত্ব থাকছে। এবছর প্রতিমা নদিয়ার চাকদহ থেকে আনা হচ্ছে। এছাড়া আলোর চমক তো থাকছেই। মহালয়ায় ভার্চুয়াল উদ্বোধন হবে মণ্ডপের।
মণ্ডপ শিল্পী উইলিয়াম সরকার বলেন, ৫ মাস ধরে শিল্পীরা কাজ করছেন। ৭০-৮০ জন শিল্পী কাজ করেছেন। লাখ লাখ দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়বে এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মণ্ডপের বাইরের প্লাই,ফাইবার ব্যবহার করা হয়েছে। ভিতরে পাহাড়ি ফুল,ফল,পাটকাঠি দিয়ে সাজানো হয়েছে। মেদিনীপুর, নদিয়া ছাড়াও অন্যান্য জেলার শিল্পীরা এই মণ্ডপের কাজ করছেন। মণ্ডপ শেষের পথে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছি।
নিরাপত্তার দিক থেকে সদা প্রস্তুত লুমিনাস ক্লাব। পুলিশি নিরাপত্তার পাশাপাশি থাকছে নিজস্ব সেচ্ছাসেবক। থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা। এছাড়া মণ্ডপ দর্শনের পর দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য থাকবে বিশাল মেলাও। হাতে গোনা কয়েকদিন। যতই হোক মেঘ গর্জন,পড়ুক বৃষ্টি। নাই বা থাকল পুজোর গন্ধ। তবু মা আসছে। প্রস্তুত লুমিনাস ক্লাব। অপেক্ষা শুধু, মাকে বরণ করা।