সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতি বছর অক্টোবর মাসে রাজধানী দিল্লি-সহ গোটা উত্তর ভারত ভয়ংকর পরিবেশ দূষণের মুখোমুখি হয়। অন্যতম কারণ শস্যের গোড়া পোড়ানো। এই নিয়ে মামলা উঠেছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার ওই মামলায় কড়া মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই। তাঁর সাফ কথা, প্রশাসনের নির্দেশিকা না মানলে কয়েক জনকে জেলে পাঠানো হোক। তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ করলে সকলের কাছে সঠিক বার্তা যাবে। সচেতন হবে মানুষ।
এদিন দূষণ সংক্রান্ত মামলা উঠেছিল প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে। দুই বিচারপতি সাফ জানান, শস্যের গোড়া পোড়ানোর কারণে তৈরি হওয়া বায়ু দূষণ কমাতেই হবে। শুনানিতে প্রবীণ আইনজীবী অপারজিতা সিং আক্ষেপের সুরে বলেন, কৃষকদের ভর্তুকি এবং সরাঞ্জম দেওয়া হচ্ছে তথাপি সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। অপারজিতা বলেন, “গতবার কৃষকরা বলেছিলেন, তাঁদের এমন সময়ে আগুন জ্বালাতে বলা হয়েছিল যখন স্যাটেলাইট সেই এলাকার উপর দিয়ে যায় না। আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে চাইছি যে ২০১৮ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট বিস্তৃত আদেশ দিচ্ছে, যদিও প্রশাসন অসহায়।”
বুধবার পঞ্জাব সরকারের হয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী রাহুল মেহরা। তিনি দাবি করেন, তাঁদের রাজ্যে আগের তুলনায় শস্যের গোড়া পোড়ানো কমেছে। এরপরেই প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনারা কিছু শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কথা কেন ভাবেন না? যদি কিছু লোককে জেলে পাঠানো যায়, তবেই সঠিক বার্তা যাবে। যদি সত্যিই পরিবেশ রক্ষা আপনাদের উদ্দেশ্য হয়, তা হলে লজ্জা কিসের?” তিনি যোগ করেন, “আমরা এটিকে (দূষণ রোধ) পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হিসাবে দেখতে পারি না। কৃষকেরা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের জন্যই আমরা খেতে পাচ্ছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা নিজেদের পরিবেশকে রক্ষা করব না।”
এমন পর্যবেক্ষণ ছাড়াও দূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক নির্দেশিকা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যেমন, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টকে তিন মাসের মধ্যে শূন্যপদে লোক নিয়োগ করতে হবে। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান, পাঞ্জাব রাজ্য সরকারকেও তিন মাসের মধ্যে দূষণ পর্ষদের শূন্যপদে লোক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, এই রাজ্যগুলিতেই কৃষকরা শস্যের গোড়া পোড়ায়। ফলে ভোগে রাজধানী দিল্লি।