• বিভাসের ফ্ল্যাটে তালা ভাঙা নিয়ে ‘সংঘাত’ দুই রাজ্যের পুলিশের, মামলা গড়াল আদালতে
    প্রতিদিন | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব আইচ:  বেলেঘাটা পুলিশ এবং নয়ডা পুলিশের মধ্যে ‘সংঘাত’। তালা ভাঙা নিয়ে ‘সংঘাত’ গড়াল আদালত পর্যন্ত। আজ বুধবার বেলেঘাটায় বিভাস অধিকারীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাতে যায় নয়ডা থানার পুলিশ। কিন্তু ফ্ল্যাটের চাবি না পাওয়ায় তালা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন সে রাজ্যের পুলিশ। কিন্তু তাতে বেলেঘাটার পুলিশ ‘বাধা’ দেয় বলে অভিযোগ। এমনকী শিয়ালদহ কোর্ট থেকে অনুমতি আনতে হবে বলেও নয়ডা পুলিশকে জানান বেলেঘাটার থানার আধিকারিকরা। এরপরেই শিয়ালদহ আদালতের দ্বারস্থ হয় নয়ডা থানার পুলিশ। মামলার শুনানিতে রীতিমতো আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে।

    মামলার শুনানিতে শিয়ালদহ আদালত মৌখিকভাবে জানায়, ‘এই অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ার এই আদালতের নেই। সার্চ ওয়ারেন্ট থাকলে পুলিশ তল্লাশি চালাতেই পারে।” এক্ষেত্রে পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত যে ক্ষমতার কথা মনে করিয়ে শিয়ালদহ আদালতের বিচারক বলেন, ”কোনও আসামী যদি ভিতরে থাকে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ধরার ক্ষেত্রে কোর্টের অনুমতি আপনারা নেন?” কার্যত পুলিশকেই ভর্ৎসনা আদালতের। যদিও এদিন নয়ডা পুলিশ আদালতে জানায়, ”বিভাস অধিকারীর অফিসে তল্লাশি চালানোর অনুমতি রয়েছে নয়ডা আদালতের।” তবে এক্ষেত্রে শিয়ালদহ আদালত পালটা জানায়, ”একান্তই বেলেঘাটা থানা তালা ভাঙতে আপত্তি জানায় সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে তালা ভাঙার অনুমতি আনতে পারে নয়ডা পুলিশ।”

    কিন্তু কেন ‘সংঘাতে’র পরিস্থিতি তৈরি হল? প্রবাসী এক ভারতীয়কে প্রতারণার মামলায় এদিন নয়ডা পুলিশের একটি টিম কলকাতায় আসে। প্রতারিত ওই ব্যক্তির নাম হারনিক সিং। তিনি কানাডার বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের এক পুলিশের আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে তাঁকে ভিডিও কলে ভয় দেখানো হয়। বলা হয়, আমেরিকার এক প্রবাসী ভারতীয়ের নামে মামলা রয়েছে পুলিশে। তাঁকে নাকি সাহায্য করেছিলেন হারনিক। ফলে তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা করার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী একটি ভুয়ো নোটিশও হারনিককে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। যেখানে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর দিয়ে ১৮ লাখ টাকা দিতে বলা হয়! ভয় পেয়ে সেই টাকাও দিয়ে দিয়েছিলেন হারনিক।

    কিন্তু গ্রেপ্তারের পরেই বিভাসের ছবি সামনে আসায় হারনিক বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের ওই পুলিশ আধিকারিক আর কেউ নয়, অভিযুক্ত বিভাসই। এরপরেই নয়ডা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সেই তদন্তেই এদিন বেলেঘাটায় আসে নয়ডা থানার পুলিশ। বেলেঘাটা থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়েই বিভাসের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চান তাঁরা। আর সেখানে তালাভাঙা নিয়ে নয়ডা থানার সঙ্গে বেলেঘাটা থানার মধ্যে ‘সংঘাতে’র পরিস্থিতি তৈরি হয়।

    বলে রাখা প্রয়োজন, ভুয়ো থানা খুলে প্রতারণার অভিযোগে বিভাস অধিকারীকে গ্রেপ্তার করে নয়ডা থানার পুলিশ। শুধু বিভাসই নয়, গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর ছেলে সহ আরও বেশ কয়েকজনকে। শুধু ভুয়ো থানাই নয়, এর আগে নিয়োগ দুর্নীতিতেও নাম জড়িয়েছিল বীরভূমের বাসিন্দা বিভাসের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)