আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৯৬০ সালে রাজ্য গঠনের সময় থেকেই গুজরাট 'শুষ্ক রাজ্য' বা 'ড্রাই স্টেট' হিসাবে পরিচিত। অর্থাৎ এখানে মদ তৈরি, বিক্রি এবং সেবন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই আইনি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যজুড়ে যে বেআইনি মদের কারবার রমরমিয়ে চলছে, তা ফের একবার প্রকাশ্যে এল। সম্প্রতি আহমেদাবাদের বারেজা তালুকে একটি বাড়িতে পুলিশের তল্লাশিতে যে দৃশ্য দেখা গেল, তাতে তাবড় তাবড় গোয়েন্দাদেরও চোখ কপালে ওঠার জোগাড়! দেওয়ালের ভিতর এবং শৌচাগারের কমোডের নীচ থেকে উদ্ধার হল প্রায় ৮০০ বোতল মদ।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক পুলিশকর্মী শৌচাগারের কমোডটি সরাতেই নিচে একটি গুপ্ত পথের সন্ধান মিলছে, যা সোজা গিয়ে পৌঁছেছে মদের ভান্ডারে। অভিনব উপায়ে মদ লুকিয়ে রাখার এই দৃশ্য দেখে তাজ্জব নেটদুনিয়া।
ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই ইতিমধ্যেই মন্তব্যের বন্যা বয়ে গিয়েছে। একদিকে যেমন বেআইনি কারবারের বাড়বাড়ন্ত রুখতে রাজ্যে মদ বিক্রির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি তুলেছেন অনেকে, তেমনই বহু নেটিজেন মজাদার সব মন্তব্য করেছেন।
এক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, "একেই বলে প্রযুক্তি!" আর এক জনের রসিক মন্তব্য, "এই ফ্ল্যাটের সঙ্গে আপনি একটি সংযুক্ত বার-থ্রুমও পাচ্ছেন।" অন্য এক জন লিখেছেন, "প্লাম্বিংয়ের নতুন কলাকৌশল।" তবে এর মধ্যেই অনেকে মূল সমস্যাটির দিকে আঙুল তুলেছেন। এক ব্যবহারকারীর মতে, "মদ বিক্রি আইনি করে দিন এবং প্রতিটি লেনদেনের উপর কর বসান।" আর এক জনের বক্তব্য, "দয়া করে রাজ্যে মদ বিক্রি আইনসম্মত করুন, যাতে লোকেদের অন্তত এমন জায়গা থেকে মদ বের করে খেতে না হয়।"
উল্লেখ্য, মহাত্মা গান্ধীর আদর্শকে সম্মান জানিয়েই গুজরাটে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। যদিও একবিংশ শতকের ব্যবসায়িক পরিবেশের সঙ্গে তাল মেলাতে ২০২৩ সালে গুজরাট ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স টেক-সিটি (গিফট সিটি) এলাকায় বিদেশি নাগরিক ও কর্মীদের জন্য মদ্যপানের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু রাজ্যের বাকি অংশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় চোরাকারবারিদের পোয়াবারো।
এই ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। গুজরাট সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিগত দুই বছরে রাজ্য পুলিশ প্রায় ২১২ কোটি টাকার দেশি ও বিদেশি মদ বাজেয়াপ্ত করেছে। বারেজার ঘটনাটি ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ‘শুষ্ক’ গুজরাটে মদের স্রোত বন্ধ করা যায়নি।