দুয়োরানি থেকে এক পলকে সুয়োরানি! মাটি খুঁড়ে আচমকাই কোটি টাকার হিরে পেলেন হতদরিদ্র মহিলা
আজকাল | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: কথায় বলে, ভাগ্য ফিরতে সময় লাগে না। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলার রাজপুর গ্রামের আদিবাসী মহিলা বিনীতা গোন্ডের ক্ষেত্রে যেন অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হল সেই প্রবাদ। খনি থেকে মাটি খুঁড়তে গিয়ে তিনি খুঁজে পেলেন তিনটি বহুমূল্য হিরে। এর আনুমানিক বাজারমূল্য হতে পারে কয়েক লক্ষ টাকা। মঙ্গলবার সরকারি আধিকারিকেরা এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
পান্নার হিরে আধিকারিক অনুপম সিংহ মঙ্গলবার জানান, বিনীতা দেবীর পাওয়া হিরে তিনটির ওজন যথাক্রমে ১.৪৮ ক্যারাট, ২০ সেন্ট এবং ৭ সেন্ট। তিনি আরও বলেন, "এই তিনটি হিরের মধ্যে একটি উৎকৃষ্ট বা 'জেম কোয়ালিটি'র, যা অত্যন্ত উচ্চমানের বলে মনে করা হয়। বাকি দুটি তুলনায় কিছুটা নিম্নমানের।" সরকারি নিয়ম মেনে শীঘ্রই এই হিরেগুলি নিলামে তোলা হবে এবং তার পরই এগুলোর প্রকৃত মূল্য নির্ধারিত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অনুপম সিংহ আরও জানান, বিনীতা দেবী সরকারি দপ্তর থেকে পাতি এলাকায় একটি খনি লিজ নিয়েছিলেন। খবর অনুযায়ী সঙ্গীদের সঙ্গে মিলে সেই খনিতেই খননকার্য চালাচ্ছিলেন তিনি। আর তাতেই মিলেছে এই অভাবনীয় সাফল্য।
তবে পান্নার রত্নগর্ভা মাটিতে এমন ভাগ্যবদলের ঘটনা এই প্রথম নয়। এই জেলা বরাবরই সাধারণ মানুষকে রাজা করে দেওয়ার জন্য পরিচিত। মাস দুয়েক আগেই, গত জুলাই মাসেও এক শ্রমিক দম্পতির হিরে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। ছত্রপুর জেলার বাসিন্দা হরগোবিন্দ যাদব ও তাঁর স্ত্রী পবন দেবী যাদব একটি স্থানীয় খনি থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা মূল্যের অন্তত আটটি হিরে খুঁজে পেয়েছিলেন।
এই ঘটনার জেরে সংবাদমাধ্যমকে তাঁরা জানিয়েছিলেন, একটি হিরের আশায় গত পাঁচ বছর ধরে পান্নার অগভীর খনিগুলিতে প্রতিদিন মাটি খুঁড়ে গিয়েছেন তাঁরা। অবশেষে তাঁদের সেই কঠোর পরিশ্রমের ফল মিলেছে। দিনের পর দিন ধরে খনি খুঁড়ে যাওয়া আর খালি হাতে বাড়ি ফেরার গ্লানি এক লহমায় মুছে গিয়েছিল তাঁদের।
বিনীতা গোন্ড এবং যাদব দম্পতির এই কাহিনি আরও একবার প্রমাণ করল, পান্নার মাটি আজও বহু সাধারণ মানুষের স্বপ্নকে সত্যি করার ক্ষমতা রাখে। একটি লিজ আর অক্লান্ত পরিশ্রম - এই দুইয়ের ভরসাতেই একদিন মাটির গভীর থেকে উঠে আসতে পারে চোখ ধাঁধানো হিরে, যা বদলে দিতে পারে গোটা জীবন। বিনীতার পাওয়া হিরেগুলি এখন নিলামের অপেক্ষায়, আর সেই সঙ্গে এক নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছেন রাজপুরের ওই আদিবাসী মহিলা।