• কলকাতায় বড় আবাসনে অতিথিদের জন্য পৃথক পার্কিং বাধ্যতামূলক, শহরের পার্কিং সঙ্কট মোকাবিলায় পদক্ষেপ পুরসভার
    আনন্দবাজার | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • কলকাতা পুরসভা শহরের পার্কিং সঙ্কট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বার থেকে ৫,০০০ বর্গমিটার বা প্রায় ৫৩ হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের আবাসিক প্রকল্পে অতিথিদের জন্য পৃথক গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক হবে। এর আগে কেবল ১০,০০০ বর্গমিটার (প্রায় ১ লাখ বর্গফুট) আয়তনের প্রকল্পগুলিতে এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর ছিল। ফলে ছোট পরিসরের বড় আবাসিক কমপ্লেক্সও এ বার এই নীতির আওতায় আসছে।

    শহরের সঙ্কীর্ণ রাস্তায় পার্কিং সমস্যা যে প্রকট হয়ে উঠেছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বহু আবাসিক প্রকল্পে বাসিন্দাদের জন্য নির্দিষ্ট পার্কিং থাকলেও অতিথিদের জন্য আলাদা জায়গা না থাকায় প্রায়শই রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। এতে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ে। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে সেই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে মনে করছে কলকাতা পুরসভা।

    আবাসন নির্মাতা বা প্রোমোটারদের সুবিধার্থে কলকাতা পুরসভা ফ্লোর এরিয়া রেশিয়ো (এফএআর) ব্যবহারে ছাড় দিচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, বাড়তি এফএআর-এর অন্তত ২৫ শতাংশ অতিথিদের পার্কিং হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ৫০,০০০ বর্গফুটের প্রকল্পে প্রায় ৪০টি ফ্ল্যাট থাকতে পারে। প্রতিটির গড় আয়তন ১,০০০ বর্গফুট ধরে এই পরিমাণ ইউনিটে অতিথিদের গাড়ির জন্য আলাদা জায়গা সংরক্ষণ আবশ্যক হবে। শুধু তা-ই নয়, বহুতল গ্যারাজ নির্মাণের ক্ষেত্রেও বড় পরিবর্তন এসেছে। পুরনো নিয়মে গ্যারাজ সর্বোচ্চ দুই তলা পর্যন্ত করা যেত। এখন থেকে ছয় তলা পর্যন্ত মাল্টি-লেভেল পার্কিং গ্যারাজ বানানো যাবে। সেই সঙ্গে যান্ত্রিক বা স্ট্যাকড পার্কিংয়েরও অনুমতি থাকবে। নির্মাতাদের উৎসাহিত করতে এক স্তর পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে এফএআর-এর গণনায় ছাড় দেওয়া হবে।

    কলকাতা পুরসভার পার্কিং বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, “এটি আর শুধু ন্যূনতম নিয়ম পালনের বিষয় নয়, বরং শহরের পার্কিং সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের অংশ। এফএআর মুক্ত পার্কিং এবং মাল্টি-লেভেল গ্যারেজ নির্মাণের সুযোগ প্রকল্প পরিকল্পনায় আরও নমনীয়তা এনে দেবে।” তবে পুরসভা স্পষ্ট করেছে, আবাসন নির্মাতা সংস্থাদের পরিকল্পনার অনুমোদন প্রক্রিয়ায় একটি অঙ্গীকারপত্র জমা দিতে হবে। এতে উল্লেখ থাকবে, এই পার্কিং এলাকা ভবিষ্যতে অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া, পার্কিং প্রয়োজনীয়তার হিসাব হবে প্রকল্পের মোট নির্মিত আয়তন অনুযায়ী। আগে যে ভাবে কার্পেট এরিয়া (বাসযোগ্য অংশ) ধরে হিসাব করা হত, সেই নিয়ম বাতিল করে নতুন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সব মিলিয়ে, কলকাতা পুরসভার এই পদক্ষেপে যেমন প্রোমোটারদের নতুন নিয়ম মেনে চলতে হবে, তেমনই শহরের ভোগান্তি কমাতে এটি কার্যকর ভূমিকা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)