• আরএসএস, বিজেপি, সরকার: কলকাতার জাদুঘরে মোদীর ৭৫ বছরের যাত্রাপথের প্রদর্শনী! শুরু জন্মদিনে, শেষ মহালয়ায়
    আনন্দবাজার | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পাঁচ দিনের জন্য ‘মোদী প্রদর্শনী’ আয়োজিত হচ্ছে কলকাতায়। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হচ্ছে। প্রশাসক মোদীর বয়সও মাইলফলক স্পর্শ করছে আগামী মাসেই। তিনি ২৫ বছরে পদার্পণ করতে চলেছেন প্রশাসক হিসাবে। ৭৫ বছরের যাত্রাপথ তুলে ধরে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন হচ্ছে দেশ জুড়ে। কলকাতার জাদুঘরে (ইন্ডিয়ান মিউজ়িয়ামে) মোদীর জন্মদিনেই এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন হচ্ছে।

    নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে উদ্‌যাপনের বদলে ‘সেবাপক্ষ’ পালন করে বিজেপি। কারণ মোদী উৎসবের ঢঙে নিজের জন্মদিন পালন পছন্দ করেন না বলে বিজেপি সূত্রের দাবি। কিন্তু এ বারের জন্মদিন মোদীর জীবনেও বিশেষ মাইলফলক। তাই এ বারের ‘সেবাপক্ষ’ অন্যান্য বারের চেয়ে আলাদা।

    কলকাতায় প্রদর্শনীর আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় ও জাতীয় পরিষদ সদস্যা শতরূপা। শতরূপা বলছেন, ‘‘মোদীজি ৭৫ বছর পূর্ণ করছেন। সংগঠনে এবং সরকারে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তো বটেই, এই দীর্ঘ যাত্রাপথে স্মরণীয় তথা উল্লেখযোগ্য ঘটনাও অজস্র। ছবি ও কথায় সে সবই তুলে ধরা হবে সাধারণ জনতার সামনে।’’ বিজেপি মোদীকে ‘বিশ্বের জনপ্রিয়তম’ নেতা হিসাবে আখ্যায়িত করে থাকে। বিজেপি এ-ও মনে করে যে, মোদীর উঠে আসার পটভূমি, জীবন এবং যাত্রাপথকে আরও গভীর ভাবে জানার আগ্রহও বহু মানুষের রয়েছে। সে সব মাথায় রেখেই এই প্রদর্শনীর কথা ভাবা হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। শতরূপার কথাতেও তারই ইঙ্গিত। তিনি বলছেন, ‘‘সাধারণ জনতার জন্যই আমরা এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছি। মোদীজি সম্পর্কে যাঁরা আরও বেশি করে জানতে আগ্রহী, এই প্রদর্শনী তাঁদের মুগ্ধ করবে।’’

    কলকাতা ছাড়াও দেশের আরও ২২টি শহরে এই প্রদর্শনীর আয়োজন হচ্ছে। মোদীর জীবন বা কাজ নিয়ে প্রদর্শনী এই প্রথম নয়। কিন্তু যে আকারে এবং ব্যপ্তিতে এই প্রদর্শনী আয়োজিত হচ্ছে, তা এই প্রথম। কলকাতায় প্রদর্শনীটি ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর, পাঁচ দিন চলবে। এতটাই বড় আকারে তার আয়োজন হচ্ছে যে, জাদুঘরের কোনও একটি ঘরে বা কোনও একটি হলে তার আয়োজন সম্ভব নয়। দু’টি তল এবং মাঝের সুবিস্তৃত চত্বর (কোর্টইয়ার্ড) জুড়ে প্রদর্শনী সাজানো হচ্ছে। পাঁচ দিনই সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রদর্শনী খোলা থাকবে। প্রতিদিনই থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বুধবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন।

    আট বছর বয়সে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন মোদী। ২৭ বছর পরে আরএসএস-ই মোদীকে বিজেপিতে পাঠায়। শুধুমাত্র সংগঠক হিসেবে বিজেপিতে কাজ করেন ১৬ বছর। তার পরে বিজেপি তাঁকে সংগঠন থেকে প্রশাসনে পাঠায়। ২০০১ সালে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হন। সেই থেকে এ পর্যন্ত ২৪ বছর একটানা প্রশাসনিক জীবনে। অরাজনৈতিক সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন এবং সরকার, তিন রকম জায়গায় এত দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা এই মুহূর্তে ভারতে অন্য কোনও সক্রিয় রাজনীতিকের রয়েছে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

    শমীকের কথায়, ‘‘মোদীজির গোটা জীবনই সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের প্রতি সমর্পিত। সঙ্ঘে হোক, বিজেপিতে হোক বা সরকারে, যখন যেখানে কাজ করেছেন ভারতের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেছেন। তাঁর গোটা জীবনপথ যে এই নির্দিষ্ট অভিমুখেই এগিয়েছে, তা প্রদর্শনীতে এলে স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।’’ শমীক বলছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী দেশকে কোথা থেকে কোথায় তুলে এনেছেন, সে স্মৃতি যদি ঝালিয়ে নিতে চান, তা হলে এই প্রদর্শনীতে অবশ্যই আসুন। আর্থিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ভারতের ছবি বদলে যাওয়া, অন্তরীক্ষ থেকে পাতাল পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে নতুন নতুন সাফল্যের মাইলফলক স্পর্শ করা এবং গোটা বিশ্বের সামনে ভারতের অস্তিত্বকে অনেক বেশি উজ্জ্বল করে তোলা— একসঙ্গে এত কিছু অন্য কোনও প্রধানমন্ত্রীর জমানায় হয়নি। জাদুঘরে আগামী পাঁচ দিন, ভারতের সেই অগ্রযাত্রাটাও চোখের সামনে জ্বলজ্বল করবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)