• এত কাজ বাকি, রাজ্য করছেটা কী? আদালতের পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে হাই কোর্টের প্রশ্ন মুখ্যসচিবকে, ৫০ কোটি মঞ্জুর
    আনন্দবাজার | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • হাই কোর্ট এবং বিভিন্ন নিম্ন আদালতের উন্নয়নমূলক কাজ আটকে রয়েছে। অর্থের অভাবে কোনও কাজ এগোনো যাচ্ছে না। রাজ্য সে বিষয়ে কী পদক্ষেপ করছে? মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের কাছে জানতে চাইল হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। অভিযোগ, আদালতের অনেক প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয়েছে সরকারকে। কিন্তু তার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে তড়িঘড়ি আদালত উন্নয়নের স্বার্থে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা জানান মুখ্যসচিব। অন্য বকেয়া প্রকল্পগুলি নিয়ে উত্তর দিতে আরও সাত দিন সময় চেয়ে নিয়েছেন তিনি। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

    আদালতের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা জানিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সরকারের কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছিল। কেন সে সব কাজ এগোয়নি, তা নিয়ে আগেই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যসচিব। এর আগে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজিরা দিয়ে তিনি কিছু সময় চেয়েছিলেন। বুধবার আবার সেই মামলার শুনানি ছিল। মুখ্যসচিব আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির হয়ে জানান, আদালত উন্নয়নের খাতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। নিম্ন আদালত এবং হাই কোর্টের ১৪টি প্রকল্পের কাজে ওই অর্থ ব্যয় হবে। এই সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থ দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মুখ্যসচিবের এই উত্তরে বিচারপতিরা সন্তুষ্ট হননি। কারণ আরও ৫৩টি প্রকল্পের কথা রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছিল। আদালত জানতে চায়, তা নিয়ে রাজ্যের অবস্থান কী?

    পেপারলেস ফাইলের কাজ গত ফেব্রুয়ারি থেকে থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, আদালত জানায়, জেলা আদালত এবং হাই কোর্টে কর্মচারীর অভাব রয়েছে। অবিলম্বে কর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন। রাজ্যকে তা জানানো হলে প্রশাসনিক বৈঠকে বলা হয়েছিল, আদালতের এই সংক্রান্ত কাজে সমন্বয়ের জন্য দু’জন অফিসারকে নিয়োগ করবে রাজ্য। এখনও কেন তা করা হয়নি? প্রশ্ন করেছেন বিচারপতিরা। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, যাবতীয় বকেয়া কাজ অবিলম্বে শুরু হবে। প্রয়োজনে চলবে নজরদারি। তবে কিছু বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকায় দেরি হচ্ছে বলে জানান তিনি। বাকি ৫৩টি প্রকল্পের কাজের বিষয় খতিয়ে দেখতে আরও সাত দিন সময় চেয়েছেন মুখ্যসচিব। ওই সংক্রান্ত নথিপত্র ঘেঁটে তিনি রাজ্যের অবস্থান জানাতে পারবেন। আদালত তাঁকে সেই সময় দিয়েছে।

    অভিযোগ, বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা জানিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ২০২৪ সালেই রাজ্যের কাছ থেকে অর্থ চাওয়া হয়েছিল। রাজ্য তা দেয়নি। ফলে আদালতে অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। কার্টিজ় কাগজ নেই। গত বছর ডিসেম্বর মাসে সিসিটিভি চাওয়া হয়েছিল, এখনও তা পাওয়া যায়নি। হাই কোর্ট বিল্ডিং কমিটির অনুমোদনপ্রাপ্ত ৫৫টি প্রকল্পের জন্য ৫.৬৯ কোটি টাকা দেয়নি রাজ্য। আরও ৩০টি প্রকল্পের ৪ কোটি টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। হাই কোর্টের মূল ভবনের নীচে মেডিক্যাল ইউনিটের অর্থও পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ৷ ফলে আইনজীবী বা বিচারপ্রার্থীরা অসুস্থ হলে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বুধবার ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)