সংবাদদাতা, বালুরঘাট: বালুরঘাট শহর থেকে আস্ত একটি টাওয়ার চুরির অভিযোগ। সেই অভিযোগ থানায় জমা পড়ল প্রায় তিন বছর পর। টাওয়ার সংস্থার পক্ষে এক টেকনিশিয়ান অভিযোগ দায়ের করেছিল বালুরঘাট থানায়। তার অভিযোগের তির ছিল টাওয়ারের জন্য জায়গা প্রদানকারী মালিকের বিরুদ্ধে। তিনিই নাকি টাওয়ার চুরি করেছেন। কিন্তু তদন্তে নেমে অবাক পুলিশ। টাওয়ার সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান তথা অভিযোগকারীকেই গ্রেপ্তার করেছে বালুরঘাট থানা। ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে বালুরঘাট শহরে। ধৃতের নাম কাজল মহন্ত। তার বাড়ি বালুরঘাট শহর লাগোয়া রঘুনাথপুর ত্রিনাথ মন্দির পাড়া।
বুধবার বালুরঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করে বালুরঘাট ডিএসপি (সদর) বিক্রম প্রসাদ বলেন, টাওয়ার চুরি হয়ে যাওয়ার একটি অভিযোগ থানায় দায়ের হয়েছিল। তদন্তে নেমে দেখা যায়, যে ব্যক্তি চুরির অভিযোগ দায়ের করেছিল, সে ওই টাওয়ার ২০২২ সালে খুলে নিয়ে যায়। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যাটারি উদ্ধার হয়েছে। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে অভিযোগকারীকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বালুরঘাট শহরের ডানলপ মোড়ে একটি টাওয়ার ছিল। ২০২২ সালে জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার পর টাওয়ার খুলে নিয়ে যায় কোম্পানির টেকনিশিয়ান। এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু প্রায় ৩ বছর পর গত জুলাই মাসে সেই জমির মালিকের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দায়ের করেন সংস্থার কাজল মহন্ত। সে ওই টাওয়ার সংস্থার টেকনিশিয়ান। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযোগকারী টেকনিশিয়ানের কাছ থেকে ওই টাওয়ারের ব্যাটারি উদ্ধার করে।
জানা গিয়েছে, ধৃতের গোপন ডেরায় হানা দিয়ে ওই টাওয়ারের ২৪ টি ব্যাটারি ও বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। এরপরই টেকনিশিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, টাওয়ার সংস্থার হয়ে বীমা পেতেই এই চক্রান্ত করে অভিযোগকারী। পুলিশের অনুমান, ওই টাওয়ার সংস্থার অনেকে একটি চক্র চালায়। ওই টাওয়ার সংস্থার ম্যানেজারও একটি চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ধৃতের সঙ্গে আর কে বা কারা রয়েছে, তার খোঁজ করছে পুলিশ।
শহর, গ্রামে টাওয়ার বসানোর নাম করে মানুষকে প্রতারণা করা নতুন বিষয় নয়। বহু ভুয়ো সংস্থা টাওয়ার বসানোর নামে জমির মালিকের সঙ্গে প্রতারণা করে। লোভ দেখিয়ে টাকাও আত্মসাত্ করে নেয়।
দু’দিন আগেই বালুরঘাট থানার পুলিশ সমস্ত টাওয়ার সংস্থা এবং জমির মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে সতর্ক করে দিয়েছে। চুক্তি শেষের পর টাওয়ার খুলে নিয়ে গেলে প্রয়োজনীয় নথিতে সই করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। প্রয়োজনে ভিডিওগ্রাফি এবং পুলিশকেও খবর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বালুরঘাট থানা। - নিজস্ব চিত্র।