স্কুল টাইমে বিএলওদের ট্রেনিং, তমলুকে ক্ষুব্ধ প্রধানশিক্ষকরা
বর্তমান | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: স্কুলটাইমে বিএলওদের ট্রেনিং হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরে। ১৩থেকে ১৯সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তমলুক ও শহিদ মাতঙ্গিনী সহ বিভিন্ন ব্লকে বিএলওদের ট্রেনিং শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হচ্ছে প্রশিক্ষণ পর্ব। বিএলও হিসেবে নিয়োগপত্র পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুল কামাই করে বিডিও অফিসে ট্রেনিংয়ে হাজির হচ্ছেন। এর ফলে স্কুলের পড়াশোনা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে ইনভিজিলেটরের কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এনিয়ে সরব হয়েছেন একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তাঁদের বক্তব্য, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় সংসদ থেকে পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ছুটি মঞ্জুর করতে নিষেধ করা হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, শিক্ষকদের শিক্ষা বহির্ভূত কাজে লাগানো যাবে না। এদিকে, ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার আগে ব্লক প্রশাসন সরাসরি শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ে উপস্থিত হতে চিঠি দিচ্ছে। এর ফলে স্কুলে পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
এবার প্রত্যেকটি বুথে নতুন বিএলও নিয়োগ করা হয়েছে। বিএলও নিয়োগ ঘিরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অনেক ব্লকে বিস্তর জটিলতা তৈরি হয়। কারণ, অনেকেই এই দায়িত্ব নিতে চাননি। এই অবস্থায় কোথাও বিকল্প খুঁজে আবার কোথাও শোকজ করে প্রশাসনিক স্তরে চাপ বাড়িয়ে বিএলও নিয়োগ করা হয়েছে। জেলার ৪৪২০টি বুথে বিএলও নিয়োগের কাজ প্রায় শেষ। প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে। তবে, ব্লকস্তরে প্রশিক্ষণ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নরকম হচ্ছে। এমনকী, জেলার সঙ্গে সমন্বয় না রেখে কোথাও কোথাও ট্রেনিং হচ্ছে বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর। যেমন, কোলাঘাট ব্লকে ১২সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা ২টার পর অফিস টাইমের বাইরে বিএলওদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অথচ, তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে ১৩-১৯সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ট্রেনিংয়ের সময়সীমা ধার্য। এনিয়ে প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
কোলাঘাটের দেড়িয়াচক শ্রীঅরবিন্দ বিদ্যামঠের প্রধান শিক্ষক নির্মলেন্দু ঘড়া বলেন, কোলাঘাট ব্লকে বিএলওদের অফিস টাইমের বাইরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অথচ, তমলুক ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক স্কুল টাইমে শিক্ষকদের যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ চলছে। এখন উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম ও তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা চলছে। ইনভিজিলেটরের দায়িত্ব এবং পঠনপাঠন সামলাতে হচ্ছে শিক্ষকদের। তারউপর ট্রেনিংয়ের জন্য শিক্ষকদের তুলে নেওয়ায় খুব অসুবিধা হচ্ছে। কোলাঘাটে অফিস টাইমের বাইরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারলে তমলুক, শহিদ মাতঙ্গনী ব্লক প্রশাসন কেন পারবে না?
তমলুকের কেলোমাল সন্তোষিনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃন্ময় মাজী বলেন, এইসময় বিএলও প্রশিক্ষণের কাজ চলায় ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিকের ইনভিজিলেটরের দায়িত্ব সামলাতে অন্য স্কুলে শিক্ষক পাঠাতে হচ্ছে। তারউপর বিএলও ট্রেনিংয়ের জন্য দিনের পর দিন শিক্ষকদের হাজির থাকতে হচ্ছে। পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কার্খদা নারায়ণচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, বিএলওর দায়িত্ব নেওয়ার কারণে পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছে।