• জেলাজুড়ে ৭০০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার হবে, খরচ ২৩৮ কোটি টাকা
    বর্তমান | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: উৎসবের মরশুমে জেলাজুড়ে রাস্তা সংস্কারে হাতে নিল নদীয়া জেলা প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা রাস্তায় নাজেহাল জেলার বাসিন্দারা। এবার ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’, জনপ্রতিনিধিদের কাছে এবং অন্যান্য মাধ্যমে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন এই উদ্যোগ নিয়েছে। জেলার মোট ৪৪৬টি রাস্তা সংস্কার করা হবে। এর জন্য প্রয়োজন প্রায় ২৪০ কোটি টাকা। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর এই কাজ করবে। জানা গিয়েছে, এই সংস্কার কর্মসূচির আওতায় মোট ৭০০ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার করা হবে। নদীয়া জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অনুপকুমার দত্ত জানিয়েছেন, জেলাজুড়ে রাস্তাঘাটের সমীক্ষা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। সাধারণ মানুষের তরফ থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে যে অভিযোগ জমা পড়েছিল, সেই তথ্যের ভিত্তিতেই রাস্তা বাছাই করা হয়েছে। আর্থিক অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি। প্রথমে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরে জেলার বিভিন্ন ব্লক ও গ্রামীণ এলাকার ৫০৬টি রাস্তা সংস্কারের আবেদন জমা পড়ে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনকে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সমীক্ষার পর জানা যায়, এর মধ্যে ৪৪৬টি রাস্তা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত এবং অতি দ্রুত সেগুলির সংস্কার প্রয়োজন। এর মধ্যে ৩৪১টি পিচের রাস্তা এবং ১০৫টি কংক্রিটের রাস্তা। এই কাজ করতে খরচ হবে প্রায় ২৩৮ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই খসড়া বাজেট তৈরি করে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। আর্থিক অনুমোদন পাওয়ার পরই কাজ শুরু হবে। এছাড়া কয়েক সপ্তাহ আগে অতিবৃষ্টির জেরে জেলার বহু রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সময়ে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর জেলার প্রতিটি ব্লক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তথ্য সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায়, জেলাজুড়ে ৫৫৪টি রাস্তা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, যার মোট দৈর্ঘ্য ৬২৬ কিলোমিটার। সেই সমস্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রয়োজন ৮৯ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা। এই রাস্তার তালিকাও ইতিমধ্যেই নবান্নে পাঠানো হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ এবং ডব্লিউবিএসআরডিএ প্রকল্পভুক্ত রাস্তা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অধীনে তৈরি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নামও তালিকাভুক্ত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পগুলিও খুব শিগগিরই শুরু হবে।

    জানা গিয়েছে, রাস্তার দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে কাজের দায়িত্ব ভাগ করা হয়েছে। এক কিলোমিটারের কম দৈর্ঘ্যের রাস্তা সংস্কারের দায়িত্বে থাকবে ব্লক প্রশাসন। এক থেকে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার কাজ করবে জেলা পরিষদ। আর দেড় কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের রাস্তা সংস্কারের কাজ করবে ডব্লিউবিএসআরডিএ। 

    রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই জেলাজুড়ে বড়সড় রাস্তা সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শাসকদল মানুষের কাছে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছে। সব মিলিয়ে নদীয়া জেলায় আগামী কয়েক মাসে প্রায় ১,৪০০ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার ও নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এতে একদিকে যেমন বহুদিনের দাবির সুরাহা হবে। তেমনই নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে শাসক শিবিরের জন্য এটি হবে বড় রাজনৈতিক স্বস্তির কারণ।
  • Link to this news (বর্তমান)