• রাস্তা-পুকুরের ফারাক নেই, সাইকেল নিয়ে মহেশতলায় ডুবে গেলেন যুবক
    বর্তমান | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত এবং সংবাদদাতা, বজবজ ও বারুইপুর: দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা থেকে বুধবার জলে ডুবে মৃত্যুর খবর মিলেছে। মহেশতলায় সাইকেল সমেত পুকুরে পড়ে গিয়েছে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। আর উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে বাঁওড়ের জলে ডুবে যান এক প্রৌঢ়। জলে তাঁর মোবাইল পড়ে গিয়েছিল। সেটি তুলতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এছাড়া কুলতলিতে আরেক প্রৌঢ়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয় জলাশয় থেকে।

    মহেশতলা পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মণ্ডল পূর্বপাড়ার দু’টি পুকুরের মাঝে দিয়ে গিয়েছে কংক্রিটের রাস্তা। বৃষ্টি হলেই দু’টি পুকুর প্লাবিত হয়ে মাঝের রাস্তাটি ডুবে যায়। সোমবার রাতে অন্ধকারে এই জলে ডোবা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সাইকেল সহ পুকুরে ডুবে যান রাজেশ ঘোষ (৩২) নামে এক যুবক। কেউ জানতেও পারেননি। মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় দেহটি। মহেশতলা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির বাড়ি মোল্লার গেট ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভিতর। বিভিন্ন দোকানে ওষুধ সরবরাহ করতেন। পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ওই ব্যক্তি সাঁতার জানতেন না। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, নেশা করতেন না। আসলে ওইখান দিয়ে যাওয়ার সময় কোনটা রাস্তা ও কোনটা পুকুর বুঝতে পারেননি। ফলে সাইকেল সহ ডুবে যান।

    এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে গোটা এলাকায় সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা নেই। ফলে বৃষ্টি হলেই জল জমে এখানকার রাস্তা ও পুকুর এক হয়ে যায়। সোমবার এই কারণেই ওই ব্যক্তি ডুবে গিয়েছেন। পুরসভার হেলদোল থাকলে এমনটা হতো না। মৃতের পরিবারের সদস্যরাও এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই রাস্তার আগে কেন সাইনবোর্ড থাকবে না? কেন আলো দেওয়া থাকবে না? ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শুভ্রা চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তিনি স্বীকার করেন অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে রাস্তা ও পুকুর এক হয়ে যায়। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, আসলে ওই ব্যক্তি আমাদের পাড়ার নন। বাইরের। ফলে এই রাস্তা ও পুকুর সম্পর্কে জানতেন না। এখানে ঢোকার আগে এলাকার কাউকে জিজ্ঞেস করলে সর্তক হতে পারতেন। 

    অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাতে স্বরূপনগরে জলে ডুবে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বিশ্বজিৎ দে (৫৭)। তাঁর মোবাইল জলে পড়ে গিয়েছিল। তা তোলার জন্য জলে নেমে তিনি তলিয়ে যান। তাঁর বাড়ি গোবরডাঙা পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বার্মা কলোনিতে। বিশ্বজিৎবাবু স্বরূপনগরের মেদিয়া এলাকার অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় কাজ করতেন। মঙ্গলবার তিনি কারখানায় গিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফেরার পথে স্বরূপনগরে কঙ্কনা বাঁওড়ের পাড়ে বসেন। তখনই তাঁর পকেটে থেকে মোবাইলটি জলে পড়ে যায়। মোবাইল তোলার জন্য তিনি জলে নেমে তলিয়ে যান। খবর পেয়ে রাতে চারঘাট ফাঁড়ির পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এসে তল্লাশি চালালেও তাঁর কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। বুধবার জল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

    এছাড়া তিনদিন নিখোঁজ থাকার পরে মঙ্গলবার বিকেলে কুলতলি থানার ২ নম্বর জালাবেরিয়া গ্রামের এক জলাশয় থেকে আরেক প্রৌ‌঩ঢ়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁর নাম সঞ্জয় আরাং (৫৩)। কুলতলি থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, সঞ্জয়বাবুর বাড়ি মগরাহাটে। তিনি কী কারণে কুলতলিতে এসেছিলেন, তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। এই বিষয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন কিছু বলতে চাননি। শনিবার নিখোঁজ হন সঞ্জয়বাবু। পরিবারের তরফে নিখোঁজের অভিযোগ করা হয়েছিল মগরাহাট থানায়। মঙ্গলবার বিকেলে ২ নম্বর জালাবেরিয়া এলাকায় জলাশয়ে মাছ ধরতে গিয়ে গ্রামবাসীরা সঞ্জয়বাবুর দেহ ভেসে থাকতে দেখেন। তাঁরাই খবর দেন কুলতলি থানায়।
  • Link to this news (বর্তমান)