পুলিশের ঘুষ নেওয়াটা কি ‘সরকারি নীতি’? মন্তব্য ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের
বর্তমান | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তদন্তকারী মহিলা পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘পুলিশের ঘুষ নেওয়াটা কি সরকারি নীতি? তাহলে কেন পুলিশকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না? অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করলে মানুষ কীভাবে ভরসা পাবে?’
মামলার বয়ান সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির তারকেশ্বরের বাসিন্দা বিল্টু হাজরা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। কিছুদিন আগে প্রতিবেশীর সঙ্গে তাঁর ঝামেলা হয়। এরপর তিনি তারকেশ্বর থানায় অভিযোগ জানান। তাঁর দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি মোটা অঙ্কের ঘুষ চান বলে অভিযোগ। ওই মহিলা তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন মোবাইলে তিনি রেকর্ড করেন বলে দাবি বিল্টুর। এরপর এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিল্টু। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চে প্রথমে মামলাটি ওঠে। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে তিনি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। বুধবার ডিভিশন বেঞ্চে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে ঘুষ চাওয়ার কথা স্বীকার করে নেয় রাজ্য। রাজ্য জানায়, তারকেশ্বর থানার ওই মহিলা পুলিশ অফিসারকে সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই বক্তব্য শুনে বিচারপতি বসাকের মন্তব্য, ‘অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় তদন্ত? কেন তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না? ওই অফিসারের এখনই চাকরি চলে যাওয়া উচিত। এমনটা হলে মানুষ পুলিশের উপর ভরসা রাখবে কীভাবে?’ বিচারপতির আরও মন্তব্য, ‘যে পুলিশ অফিসার ঘুষ চান, তিনি কী তদন্ত করবেন, তা আদালতের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। পুলিশ টাকা চাইবে, এটা কি সরকারের নীতি?’ ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানিতে ফের রাজ্যকে রিপোর্ট দিতে হবে।