সুদের কারবার ছিল রিঙ্কু সমাদ্দারের, স্বামীকে জেরা বালিগঞ্জ জিআরপির
বর্তমান | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গৃহবধূ রিঙ্কু সমাদ্দার (৩৮) খুনে উঠে এল নয়া তথ্য। মহিলা সুদের কারবার করতেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। বুধবার তাঁর স্বামীও মুম্বই থেকে এসে বালিগঞ্জ জিআরপিতে হাজিরা দেন। আদতে তিনি বাসন্তীর বাসিন্দা।
বকেয়া টাকা দেওয়ার টোপ দিয়ে মুম্বই থেকে কলকাতায় ডেকে কেউ রিঙ্কুকে খুন করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃতার দিদিও রয়েছে সন্দেহের তালিকায়। কারণ কলকাতা থেকে সুদের টাকা আদায় করে মুম্বইয়ে পাঠাতেন তিনি। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ। পাশাপাশি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে কেউ তাঁকে খুন করেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে রেল পুলিশ। বুধবার রিঙ্কুর স্বামী কার্তিককে বালিগঞ্জ জিআরপিতে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন অফিসাররা।
২৮ আগস্ট ব্রেস ব্রিজ ও সন্তোষপুর রেল স্টেশনের মাঝে উদ্ধার হয় রিঙ্কুর রক্তাক্ত দেহ। সেদিনই মুম্বই থেকে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। মৃতার স্বামী কার্তিককে জেরা করে জানা গিয়েছে, হঠাৎই রিঙ্কুর সঙ্গে তাঁর পরিচয়। আট মাস আগে তাঁকে বিয়ে করে মুম্বই নিয়ে যান। তরুণী জানিয়েছিলেন বাবা–মা নেই। দিদি থাকেন যাদবপুরের বিজয়গড়ে। রিঙ্কু কলকাতায় ফ্ল্যাট কিনতে চাইছিলেন। কার্তিককে তিনি চার লক্ষ টাকাও চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। ২৮ আগস্ট একা মুম্বই থেকে কলকাতায় আসেন রিঙ্কু। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ স্বামীকে ফোন করে জানান, তিনি হাওড়া পৌঁছে গিয়েছেন। তারপরই তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। সাঁতরাগাছিতে নামার পর এক যুবকের সঙ্গে দেখা করেন। ওই যুবকের সঙ্গে ব্রেস ব্রিজ স্টেশনে দেখা গিয়েছে রিঙ্কুকে।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, বিয়ের আগে সুদের কারবার করতেন রিঙ্কু। মুম্বই চলে এলে দিদি সুদের টাকা তুলে রিঙ্কুর কাছে পাঠাতেন। ওই দিদি অভিযোগ করার পর যে নম্বরটি অভিযোগপত্রে দিয়েছিলেন সেটি বন্ধ করে দেন। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, এই ফোনটি বন্ধ করলেন কেন? ডাকা হলেও তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। টাকার লোভে পরিচিত কাউকে দিয়ে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন কি না, জানার চেষ্টা চলছে। সুদের জন্য বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে কেউ তাঁকে খুন করেছে কি না, সেটিও দেখছে পুলিশ। রিঙ্কুর কল ডিটেইলস ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, বিয়ের পর একাধিক যুবকের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন। তার মধ্যে কারও সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে থাকতে পারেন। প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিয়ে কলকাতায় এসে তিনি খুন হয়ে গেলেন কি না, সেটাও রেল পুলিশের নজরে।