প্রেমের টানেই সব শেষ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মার্কিন মহিলাকে খুন! টাকার লোভেই ৭৫ বছরের বৃদ্ধের কীর্তি ফাঁস
আজকাল | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমের সম্পর্কে বয়স বাধা ছিল না। ৭১ বছর বয়সেও বিয়ের ইচ্ছে ছিল। এনআরআই বৃদ্ধের সঙ্গে মাখো মাখো প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ৭১ বছরের বৃদ্ধার। সেই ৭৫ বছরের বৃদ্ধের সঙ্গে বিয়ের পরিকল্পনা করেই ভারতে চলে আসেন তিনি। কথা ছিল, কয়েক মাস পরেই বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা সাত পাকে বাঁধা পড়বেন। কিন্তু ঘটল ঠিক উল্টোটা। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মার্কিন মহিলাকে খুন করার অভিযোগ উঠল ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। টাকার লোভেই খুনের পর মার্কিন মহিলাকে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে পাঞ্জাবে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৭১ বছর বয়সি বৃদ্ধা আদতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ওয়াশিংটনের সিয়াটলের বাসিন্দা। তবে তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভুত ছিলেন। ভারতে এসেছিলেন ৭৫ বছর বয়সি এক বৃদ্ধের প্রতি প্রেমের টানে। এনআরআই বৃদ্ধের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পরিকল্পনা ছিল বৃদ্ধার।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত জুলাই মাসে। কিন্তু বিষয়টি জানা গেছে দিন কয়েক আগে। ৭১ বছর বয়সি বৃদ্ধার নিখোঁজের অভিযোগের পরেই লুধিয়ানা পুলিশ মামলা রুজু করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর পরিবার তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারছিল না। এফ আই আর-এ সন্দেহভাজনদের নাম উল্লেখ করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম রূপিন্দর কৌর পান্ধের। ভারতীয় প্রেমিক চরণজিৎ সিং গ্রেওয়ালের প্রতি প্রেমের টানে দেশে এসেছিলেন রূপিন্দর। চরণজিৎ সিং মূলত লুধিয়ানার বাসিন্দা ছিলেন। চলতি বছরেই তাঁদের বিয়ের পরিকল্পনা ছিল। পরিবারের অভিযোগ, চরণজিৎ রূপিন্দরকে খুন করে জ্বালিয়ে দিয়েছেন।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে পা রাখার পর যোগাযোগ হলেও, গত ২৪ জুলাই থেকে রূপিন্দরের ফোন বন্ধ ছিল। তাঁর বোন কমল কৌর খাইরা বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রূপিন্দরের কোনও সাড়া তিনি পাননি। তারপরেই সন্লদেহ প্রকাশ করেন। অবশেষে ২৮ জুলাই তিনি নয়া দিল্লির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসকে জানান। এরপর দিল্লি থেকে লুধিয়ানা পুলিশকে বিষয়টি তদন্তের জন্যে চাপ দেওয়া হয়।
পুলিশের তরফে শেষমেশ গত সপ্তাহেই মৃত মার্কিন নাগরিকের পরিবারকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। মার্কিন নাগরিক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ মালহা পট্টির সুখজিৎ সিং সোনুকে গ্রেপ্তার করেছে। দীর্ঘ পুলিশি জেরায় সোনু খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছে। সে আরও জানিয়েছে, এটি রূপিন্দরের হবু স্বামী চরণজিতের পরিকল্পনা ছিল। তাঁর নির্দেশেই রূপিন্দরকে খুন করে জ্বালিয়ে দেয় সে। রূপিন্দরকে খুনের পর তাকে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও খুনের কারণ কী?
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের প্রস্তুতি চলাকালীন রূপিন্দর বিপুল পরিমাণ অর্থ চরণজিৎকে দিয়েছিলেন। টাকার লোভেই হবু স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করেন চরণজিৎ। তাঁকে এফ আই আর-এ সন্দেহভাজনদের তালিকায় রাখা হয়েছে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে।
ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল সতীন্দর সিং জানিয়েছেন, রূপিন্দরের মৃত্যুর পর পলাতক চরণজিৎ। সোনুকে জেরা করে মৃত মার্কিন মহিলার দেহাবশেষ এবং অন্যান্য প্রমাণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে। সোনু জানিয়েছেন, নিজের বাড়িতেই রূপিন্দরকে খুন করে। স্টোররুমে দেহটি জ্বালিয়ে দেয়।