• এক কেন্দ্রেই ৬০০০ নাম মোছার চেষ্টা, নিশানায় দলিত-কংগ্রেসি ভোটার! ভোটচুরির নতুন ‘প্রমাণ’ রাহুলের
    প্রতিদিন | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এবার আরও বিস্ফোরক অভিযোগ রাহুল গান্ধীর। লোকসভার বিরোধী দলনেতার দাবি, শুধু ভোটার তালিকায় গোলমাল নয়, এবার বেছে বেছে কংগ্রেস সমর্থক, দলিত-আদিবাসী ভোটারদের ভোট মুছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে ভোটার তালিকা থেকে। আর সেই কাজটা করা হচ্ছে সংগঠিতভাবে নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা এবং কল সেন্টারের মাধ্যমে। অথচ নির্বাচন কমিশন চুপ।

    উদাহরণ হিসাবে রাহুল কর্নাটকের অলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রের কথা বলছেন। ওই কেন্দ্রের ৬০১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে দাবি করেন রাহুল। লোকসভার বিরোধী দলনেতার দাবি, মূলত কংগ্রেস যে বুথগুলিতে শক্তিশালী, সেখানেই পরিকল্পনা করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। কিছুদিন আগে কর্নাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় লক্ষাধিক ভুয়ো ভোটার রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন রাহুল। এবার তাঁর অভিযোগ, শুধু ভুয়ো ভোটার নয়, বৈধ ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এবং সেটা করা হচ্ছে সংগঠিতভাবে কিছু নির্দিষ্ট ঠিকানা থেকে। অথচ কর্নাটক সিআইডি এ নিয়ে তথ্য চাইতে গেলে নির্বাচন কমিশন সেই তথ্যও দিতে চাইছে না।

    বৃহস্পতিবার দিল্লির সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট সফ্‌টঅয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। অলন্দ লোকসভা কেন্দ্রে এই ধরনের ৬০১৮টি ভোট মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। অথচ যাঁদের নামে এইসব ভোট মুছে ফেলার আবেদন জমা পড়ছে তাঁরা জানতেও পারছেন না। যাঁদের নামে ভোট মুছে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে হাজিরও করেন কংগ্রেস সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে, নির্দিষ্ট আইপি অ্যাডরেস ব্যবহার করে একযোগে ভোট মুছে দেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে কর্নাটকের একটি কেন্দ্রেই  ৬০১৮টি  ভোট মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। ঠিক কত ভোটারের নাম মুছে ফেলা হয়েছে, সেটা তিনিও জানেন না। এ বিষয়ে আরও তদন্তের জন্য কর্নাটকের সিআইডি আরও তথ্য চেয়েছিল নির্বাচন কমিশনের কাছে। কিন্তু জ্ঞানেশ কুমারের কমিশন সেই তথ্য দেয়নি। এতেই স্পষ্ট, নির্বাচন কমিশন ‘ভোটাচোর’দের আড়াল করার চেষ্টা করছে।

    প্রমাণ হিসাবে বেশ কয়েকটি ফোন নম্বর দেখান তিনি। যে নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। বিরোধী দলনেতার প্রশ্ন, এই নম্বরগুলি থেকে অন্য ভোটারদের নামে আবেদন করার জন্য ওটিপি গেল কীভাবে? তাঁর সাফ কথা, সাদা-কালো প্রমাণ হাতে রয়েছে। এবার কমিশনের দায়িত্ব ব্যবস্থা নেওয়া। তিনি চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছেন কমিশন যদি স্বচ্ছ্ব হয়, তাহলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কর্নাটক সিআইডিকে তদন্তে সবরকম সাহায্য করবে তারা।

    রাহুল বিহারের ভোটার অধিকার যাত্রা থেকেই ঘোষণা করেছেন, ভোটচুরি নিয়ে এবার ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাটাবেন তিনি। তবে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকের এই বিস্ফোরক অভিযোগগুলিকেও ‘হাইড্রোজেন বোমা’ বলতে নারাজ তিনি। বিরোধী দলনেতার ইঙ্গিত, ‘হাইড্রোজেন বোমা’ আরও ভয়ংকর হবে। সেটার জন্য প্রস্তুত হবে তাঁর দল।
  • Link to this news (প্রতিদিন)